বাকিতে মোবাইল বিক্রিই কাল হয়েছে রাজশাহীর বাঘার মোবাইল দোকানের বিক্রয়কর্মী জহুরুল ইসলামের। পাওনা টাকা চাওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে হত্যা করেন মাসুদ রানা (২৬) ও আমিনুল ইসলাম শাওন (৩০) নামের দুই যুবক।

শুক্রবার (১৫ জানুয়ারি) রাতে নিজ নিজ বাড়ি থেকে ওই দুই যুবককে গ্রেফতার করেছে বাঘা থানা পুলিশ। একই রাতেই গ্রেফতার করা হয়েছে তাদের সহযোগী মেহেদী হাসান রকিকে (২৩)। এ সময় তার বাড়ি থেকে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ২৮টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করেছে পুলিশ।

নিহত জহুরুল ইসলাম উপজেলার মনিগ্রাম বাজার এলাকার রফিকুল ইসলামের ছেলে। তিনি উপজেলার পানিকুমড়া বাজারের টেলিকম ও ইলেকট্রনিকসের ব্যবসায়ী মেহেদী হাসান মনির বিক্রয়কর্মী ছিলেন।

গ্রেফতার হওয়া রকি জেলার বাঘা উপজেলার জোতকাদিরপুর এলাকার ফারুক হোসেনের ছেলে। অভিযুক্ত মাসুদ রানা নাটোরের লালপুর উপজেলার বালিতিতা ইসলামপুর এলাকার আকমল হোসেনের ছেলে। আর শাওন একই উপজেলার কাজিপাড়ার সানাউল্লাহর ছেলে।

নিহত ব্যক্তির পরিবারের করা মামলায় শনিবার (১৬ জানুয়ারি) তাদের আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। আদালতে তারা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছেন। জেলা পুলিশের মুখপাত্র ইফতেখায়ের আলম এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

ইফতেখায়ের বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতাকৃতরা পুলিশকে জানিয়েছে, মাসুদ রানা ও শাওন বাকিতে জহুরুল ইসলামের কাছে মোবাইল ফোনসেট কেনেন। টাকার জন্য জহুরুল তাদের চাপ দিচ্ছিলেন। টাকা পরিশোধ না করে তারা জহুরুলকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।

তিনি আরও জানান, ৫ জানুয়ারি সন্ধ্যায় ভুক্তভোগী জহুরুল আড়ানী থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। ওই সময় মাসুদ রানা ও শাওন পাওনা টাকা দেওয়ার নাম করে তাকে উপজেলার তেঁতুলিয়া শিকদারপাড়া-কামারপাড়া এলাকার নির্জন এলাকায় ডেকে নেন। জহুরুল সেখানে পৌঁছালে তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। সঙ্গে থাকা ২৫ হাজার টাকা ও ২৮টি মোবাইল নিয়ে মরদেহ ফেলে যান অভিযুক্তরা। পরে মোবাইল ফোনসেটগুলো সহযোগী মেহেদী হাসান রকির কাছে জমা রাখেন।

মোটরসাইকেলে করে মোবাইল ফোন ও যন্ত্রাংশ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার দোকানে দোকানে পৌঁছে দিতেন। বাকিতেও পণ্য বিক্রি করতেন জহুরুল। ঘুরে ঘুরে সেই টাকা আদায়ও করতেন তিনি। ৫ জানুয়ারি সকালে কর্মস্থল থেকে বেরিয়ে আর তিনি ফেরেননি। রাতেও ফেরেননি বাড়িতে। না পেয়ে স্বজনরা ওই রাতেই বাঘা থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। পরদিন সকালে উপজেলার তেঁতুলিয়া শিকদারপাড়া-কামারপাড়া এলাকার নির্জন এলাকা থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। মরদেহের পাশ থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় তার
ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় ওই দিনই অজ্ঞাতনামা আসামি করে নিহতের ভাই রুহুল আমিন বাদী হয়ে হত্যা মামলা করেন। এরপর জড়িতদের পাকড়াও করতে মাঠে নামে পুলিশ।

এনএ