মানিকগঞ্জে বাড়ছে পানি, বাড়ছে দুর্ভোগ
প্রবল বৃষ্টি আর উজান থেকে নেমে আসা ঢলে মানিকগঞ্জের যমুনা-পদ্মাসহ অভ্যন্তরীণ নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। এতে জেলার দৌলতপুর, শিবালয় ও হরিরামপুরে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে কয়েক শতাধিক পরিবার। রাস্তাঘাটসহ ফসলি জমি তলিয়ে যাওয়ায় চলাচল ও গবাদি পশু নিয়ে দুর্ভোগে পড়েছেন এসব নিম্নাঞ্চলের মানুষ।
মঙ্গলবার (৩১ আগস্ট) বিকেল সাড়ে ৪ দিকে মানিকগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) আরিচা কার্যালয়ের পানি পরিমাপক (গেজ রিডার) ফারুক আহমেদ ঢাকা পোস্টকে জানান, সোমবার বিকেল ৩টা থেকে মঙ্গলবার ৩টা পর্যন্ত যমুনা নদীর আরিচা পয়েন্টে পানি বেড়েছে ৫ সেন্টিমিটার এবং বিপৎসীমার ৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
বিজ্ঞাপন
মানিকগঞ্জ পাউবো ও স্থানীয় সূত্র জানা গেছে, অতিরিক্ত বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলের কারণে যমুনা-পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় কালিগঙ্গা, ধলেশ্বরী, ইছামতি ও গাজীখালি নদীর পানিও বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। দৌলতপুরে যমুনা ও হরিরামপুরে পদ্মা নদীর পানি অস্বাভাবিকহারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে কয়েক উপজেলার নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
দৌলতপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নূরুল ইসলাম রাজা জানান, যমুনা নদীবেষ্টিত হওয়ায় কারণে বাঘুটিয়া, চরকাটারি, জিয়নপুর, খলসি ও বাচামারা এই পাঁচ ইউনিয়নে প্রতিবছরই নদী ভাঙন দেখা দেয়। নদীর পানি যেভাবে বাড়ছে তাতে বন্যার শঙ্কায় আছেন হাজারো মানুষ। আর নিচু এলাকা প্লাবিত হওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন এসব এলাকার মানুষজন।
উপজেলার বাচামারা ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল লতিফ জানান, পানি বৃদ্ধির ফলে ইউনিয়নের বাদুটিয়া, কোল হাসাদিয়া, চর ভারাঙ্গাসহ কয়েকটি এলাকার ৫০টি বসভিটায় পানি উঠেছে। এসব পরিবারের মানুষ দুর্ভোগের মধ্যে দিন পার করছেন।
এদিকে জেলার হরিরামপুর উপজেলার কাঞ্চনপুর, সুতালড়ি, লেছড়াগঞ্জ, আজিমনগর ও ধূলশুড়া ইউনিয়ন পদ্মা নদীবেষ্টিত হওয়ায় এসব এলাকার নিচু স্থানেও পানি প্রবেশ করেছে। ডুবে গেছে রাস্তাঘাটসহ অনেক ফসলি জমিও।
মানিকগঞ্জ জেলা পরিষদের সদস্য প্রকৌশলী সালাম চৌধুরী বলেন, পানি বৃদ্ধির কারণে নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও একটি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রে পদ্মাগর্ভে বিলীন হয়েছে। এছাড়া সরকারি-বেসরকারি অনেক প্রতিষ্ঠান ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে।
এদিকে ধলেশ্বরী ও কালিগঙ্গা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার নবগ্রাম ও দিঘী ইউনিয়নের নিচু এলাকায় এবং অধিকাংশ ফসলি জমিতেও পানি প্রবেশ করেছে।
জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আবদুল লফিত বলেন, জেলার অনেক নিচু এলাকায় পানি প্রবেশ করেছে। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় জেলা প্রশাসনের যথেষ্ট প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া খাদ্যসহায়তা থেকে শুরু করে আশ্রয়ণ কেন্দ্রগুলোও প্রস্তুত রয়েছে।
সোহেল হোসেন/এমএসআর