ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক) হাসপাতালের করোনা ইউনিটে একদিকে যেমন কমেছে মৃত্যুর সংখ্যা তেমনি কমে এসেছে রোগীর চাপও। জুলাই মাসে ইউনিটটিকে ৪৮২ জনের মৃত্যু হয়। আর আগস্ট মাসে মারা যান ৪১৯। আগস্টের শেষ ১৫ দিনে মারা গেছেন ১৫৫ জন।

চলতি মাসে মৃত্যুর সংখ্যা অনেকটাই নিচে নেমে এসেছে। বৃহস্পতিবার (০২ সেপ্টেম্বর) করোনা ইউনিটে তিন মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন মৃত্যু হয়েছে। এদিন উপসর্গ নিয়ে তিনজন মারা গেলেও করোনা আক্রান্ত হয়ে কারোরই মৃত্যু হয়নি। আগের দিন করোনা শনাক্ত একজনসহ পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। 

করোনায় ও উপসর্গে মারা যাওয়া ব্যক্তিদের নাম পরিচয় সংরক্ষণ করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তথ্য অনুযায়ী, আগস্টে মারা যাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ১৭২ জন করোনা শনাক্ত হয়ে এবং ২৪৭ জন উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন। এর মধ্যে ২২৩ জন পুরুষ ও ১৯৬ জন নারী। 

ময়মনসিংহ জেলায় করোনা ও উপসর্গে ২৭২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া জামালপুরের ৩২ জন, শেরপুরের ১৩ জন এবং নেত্রকোনার ৭১ জন মারা গেছেন মমেকের করোনা ইউনিটে। বাকি যারা মারা গেছেন তাদের ৩১ জন টাঙ্গাইল, কিশোরগঞ্জ, কুড়িগ্রাম, গাজীপুর ও সুনামগঞ্জ জেলার বাসিন্দা বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।  

হাসপাতালে ভর্তিকৃত রোগীদের নথি থেকে জানা গেছে, আগস্ট মাসে নতুন করে এক হাজার ২০৬ জন রোগী ভর্তি হয়েছিলেন। আর একই সময়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন এক হাজার ৩৭৩ জন। 

করোনা ইউনিটের মুখপাত্র ডা. মহিউদ্দিন খান মুন জানান, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ইউনিটটিতে ৪০২ শয্যার বিপরীতে রোগী ভর্তি আছেন ১৪৭ জন। এর মধ্যে ১০ জন আইসিইউতে রয়েছেন। ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে রোগী ভর্তি হয়েছেন ১৩ জন ও সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১২ জন। এছাড়াও ইউনিটে ২৩ আগস্ট থেকে দুইশ’র নিচে রয়েছে ভর্তিকৃত রোগীর সংখ্যা। 

হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ফজলুল কবীর জানান, হাসপাতালে চিকিৎসার মানের কোনো ঘাটতি নেই এবং করোনা ইউনিটের পাশাপাশি ওয়ানস্টপ ফ্লু কর্নার ও টেলিমেডিসিন সেবার মাধ্যমেও রোগীদের যথাযথ সেবা দেওয়া হচ্ছে। 

জেলা সিভিল সার্জন ডা. নজরুল ইসলাম জানান, জেলায় করোনা শনাক্ত হারও অনেকটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে। এক সপ্তাহ ধরে শনাক্তের হার ১০ থেকে ১৫ শতাংশের মধ্যে থাকছে। ২৪ ঘণ্টায় এক হাজার ৫৮ নমুনা পরীক্ষায় ১১৭ জনের দেহে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ১১.০৫ শতাংশ।

ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, করোনা প্রতিরোধে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ ও সরকারি নির্দেশনা মেনে চলার বিকল্প নেই। প্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে স্বাস্থ্য বিভাগ সমন্বয় করে কাজ করছে। এছাড়া ভ্যাকসিন প্রদান কার্যক্রমে জনসম্পৃক্ততা বাড়ানো হয়েছে।

উবায়দুল হক/এমএসআর