ভাবির প্রেমিককে খুন করে কবরস্থানে পুঁতে রাখলেন ননদ
ভাবির সঙ্গে পরকীয়ার কারণে ইসরাফিল হোসেন নামে এক যুবককে বাড়ি থেকে ডেকে এনে গলায় গামছা পেঁচিয়ে হত্যা করেছেন ননদ। এরপর সহযোগীদের সঙ্গে মিলে মরদেহটি স্থানীয় একটি কবরস্থানে পুঁতে রাখেন। পুলিশ ঘটনার সাতদিন পর হত্যার সঙ্গে জড়িত তিনজনকে আটকের পাশাপাশি মরদেহটি উদ্ধার করেছে।
বৃহস্পতিবার (০২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে যশোর জেলা পুলিশ সুপারের কনফারেন্স রুমে প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম।
বিজ্ঞাপন
নিহত ইসরাফিল হোসেন যশোরের শার্শা উপজেলার কাশিয়াডাঙ্গা গ্রামের বজলু মিয়ার ছেলে। তিনি শার্শার কাশিয়াডাঙ্গা আকিজ বিড়ি ফ্যাক্টরিতে দিনমজুরের কাজ করতেন।
আটকরা হলেন, শার্শার কাশিয়াডাঙ্গা গ্রামের কাশিয়াডাঙ্গা ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মোশারফ হোসেন, একই গ্রামের নূর মোহাম্মদের ছেলে আলম ও ইসমাইলের স্ত্রী মর্জিনা বেগম।
বিজ্ঞাপন
প্রেস ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, গত ২৭ আগস্ট ইসরাফিল হোসেন নিখোঁজ হন। পরে ২৯ আগস্ট তার পরিবারের পক্ষ থেকে শার্শা থানায় একটি জিডি করা হয়। জিডি করার পাঁচ দিনেও কোনো সন্ধান না পাওয়ায় ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম বিষয়টি তদন্তের জন্য ডিবির ওসি রুপম কুমার সরকার ও এসআই মফিজুল ইসলামকে দায়িত্ব দেন।
এরপর ডিবির ওসি রুপম কুমার সরকারের নেতৃত্বে জিডির তদন্তের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত এসআই মফিজুল ইসলাম এসআই শাহিনুর রহমান ও এএসআই এসএম ফুরকানকে নিয়ে অনুসন্ধানে নামেন। গোপন তথ্যের ভিত্তিতে ১ সেপ্টেম্বর দুপুরে কাশিয়াডাঙ্গার সাকিনে অভিযান পরিচালনা করে সন্দেহভাজন তিনজনকে আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তাদের দেওয়া তথ্য মতে সাকিনের মোড়লবাড়ি বড় কবরস্থানে মাটি চাপা দেওয়া অবস্থায় ইসরাফিলের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
প্রেস ব্রিফিংয়ে ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম জানান, আটক মর্জিনার এক ভাই বিদেশে থাকেন। তার স্ত্রীর সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক গড়ে তোলেন ইসরাফিল। এজন্য তাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন মর্জিনা। হত্যার জন্য মর্জিনা মোশারফের সঙ্গে দেড় লাখ টাকার চুক্তি করেন। সেই অনুযায়ী ইসরাফিলকে বাড়ি থেকে ফোন করে ডেকে এনে হত্যা করা হয়। হত্যার আগে তাকে মাদক সেবন করিয়ে অজ্ঞান করা হয়।
তিনি আরও জানান, পরকীয়া ছাড়াও পারিবারিক জায়গা জমি ও চলাচলের রাস্তা নিয়ে বিরোধের জের এবং মাদক ব্যবসায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে পরিকল্পিতভাবে ইসরাফিলকে হত্যা করা হয়েছে। এই হত্যা মিশনে অংশ নেন নূর আলম ও মেহেদী নামে দুই যুবক। মেহেদী ওই গ্রামে ঘরজামাই হিসেবে বসবাস করেন। তবে তাকে এখনো আটক করা সম্ভব হয়নি।
এদিকে এ হত্যার ঘটনায় শার্শা থানায় মামলা করেছেন নিহত ইসরাফিলের স্ত্রী রোজিনা বেগম। মামলায় আটক তিনজন ছাড়াও আরও তিনজন ও অজ্ঞাত দুই-তিনজনকে আসামি করা হয়েছে।
প্রেস ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) সাইফুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক সার্কেল) বেলাল হোসাইন, যশোর ডিবি পুলিশের ওসি রুপম কুমার সরকার প্রমুখ।
জাহিদ হাসান/আরএআর