টাঙ্গাইলে ভূঞাপুরে যমুনা নদীর পানি দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে ভোগান্তি। বন্যার পানি নিম্নাঞ্চলে প্রবেশ করায় তলিয়ে গেছে রাস্তা ঘাট। কোথাও কোথাও গ্রামীণ রাস্তাগুলো ভেঙে সড়ক পথে যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে গেছে।

এছাড়া বন্যার পানিতে টিউওয়েল তলিয়ে যাওয়ায় বিশুদ্ধ পানি ও শুকনা খাবারের সংকট তৈরি হয়েছে। তবে পানিতে ভাসা মানুষজনের অভিযোগ, বেশ কিছু দিন ধরে পানিবন্দি হলেও এখন পর্যন্ত কোনো ত্রাণসহায়তা পায়নি তারা।

শুক্রবার (০৩ সেপ্টেম্বর) গেল ২৪ ঘণ্টায় যমুনা নদীর পানি বেড়ে বিপৎসীমার ৬৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া ধলেশ্বরী, ঝিনাই নদীসহ জেলার বিভিন্ন নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। এদিকে যমুনা নদীর পানি উপজেলার গোবিন্দাসী বাজারে প্রবেশ করেছে। এতে বাজারের একাংশ রাস্তা তলিয়ে গেছে। এতে ব্যবসায়ীরা পড়েছেন বিপাকে। 

স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রতি বছর বন্যায় বাজারসহ আশপাশের গ্রামে পানি উঠে তলিয়ে যায়। তবে যমুনা নদীতে বাঁধ নির্মাণ করা হলে এই অঞ্চলের মানুষকে পানিতে ভাসতে হতো না। এছাড়া অকাল বন্যা ঠেকাতে যমুনা নদীর পাড় বস্তা ফেলে উচু করা হলে পানিবন্দি হতো তারা।

গোবিন্দাসী বাজারের ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম জানান, বাজারের পাশ দিয়েই বিশাল খাল রয়েছে। কিন্তু খালটি দখল আর ময়লা আবর্জনা ফেলে ভরাট করা হয়েছে। এতে বন্যার সময় পানি আসলেই খাল ভরে পানি বাজারে প্রবেশ করে।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ৬০ গ্রামের প্রায় ২০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়েছে। এর বিপরীতে ত্রাণসহায়তা পাওয়া গেছে ৫ টন চাল পাওয়া গেছে। এতে ৫০০ পরিবারের প্রত্যেক পরিবারে ১০ কেজি করে চাল ত্রাণসহায়তা হিসেবে বিতরণ করা হবে।

পানিবন্দি এসব পরিবারের বাসিন্দার অভিযোগ, অনেক দিন ধরে পানিবন্দি। বাড়ি-ঘরে শুধু নয় আশপাশের রাস্তাগুলোও পানিতে তলিয়ে রয়েছে। এতে যোগাযোগ মাধ্যমে নৌকা। পানিবন্দি হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করলেও জনপ্রতিনিধিসহ কেউ এখন পর্যন্ত কোনো খোঁজ নেয়নি।

গোবিন্দাসী ইউনিয়নের শামছুল মন্ডল জানান, বন্যার পানির তীব্র স্রোতে রাস্তা ভেঙে গেছে। ঘর বাড়িতেও পানি উঠেছে। এতে চরম কষ্টে পানিতে বসবাস করতে হচ্ছে।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) জহুরুল ইসলাম বলেন, উপজেলায় ২০ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে। প্রথম পর্যায়ে ৫০০ পরিবারের মাঝে ত্রাণসহায়তা হিসেবে প্রত্যেক পরিবারকে ১০ কেজি করে চাল বিতরণ করা হবে। ইতোমধ্যে চালগুলো পৌরসভা ও সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদে পাঠানো হয়েছে।

অভিজিৎ ঘোষ/এমএসআর