পুরোনো কারাগারে আদালত ভবন হবে কত দিনে?
অরক্ষিত অবস্থায় চুয়াডাঙ্গায় পুরোনো কারাগার ভবন
২০০৭ সালের ২১ সেপ্টেম্বর পুরোনো কারাগার থেকে বন্দি স্থানান্তরসহ যাবতীয় কিছু সরিয়ে নেওয়া হয় নতুন কারাগারে। ওই বছরেই পুরোনো কারাগার পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। অবাক হলেও সত্য যে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হলেও পুরোনো কারাগারের জানালা-দরজাসহ লোহার বড় বড় গরাল গ্রিল―কোনো কিছুই বিক্রি করে সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়নি এত দিনেও।
জানা যায়, ১৯১৩ সালে চুয়াডাঙ্গায় গড়ে তোলা হয় কারাগার। তখন তৎকালীন মহাকুমার উপকারাগার ছিল এটি। অবকাঠামো আগের মতো রেখেই পরবর্তিতে জেলা কারাগারে উন্নীত করা হয়। সে সময় বন্দির সংখ্যা বাড়ে পুরোনো এ কারাগারে। পরে অমানবিকভাবে বন্দি রাখার বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টিগোচর হলে চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরের ভিমরুল্লায় গড়ে তোলা হয় নতুন জেলা কারাগার।
বিজ্ঞাপন
কর্তৃপক্ষ আমাদের ওই পরিত্যক্ত কারাগার বুঝিয়ে দেয়নি। আমাদের কাছে পুরোনো কারাগারের কোনো চাবি নেই। সেই হিসাবে এখন জেলারের দায়িত্বে এই পরিত্যক্ত কারাগার।
প্রকৌশলী সফিকুর রহমান, গণপূর্ত বিভাগ
এদিকে দীর্ঘদিন ধরে অনেকটা অভিভাবকহীন ও অরক্ষিত অবস্থায় পড়ে রয়েছে চুয়াডাঙ্গার পুরোনো জেলা কারাগারটি। কারাগারের পাশ দিয়ে গেলেই নাকে আসে নেশার গন্ধ। এ কারণে মাদকসেবীদের নিয়মিত আড্ডা হয় এখানে। এতে লোহার দরজা, জানালা ও ইটও খোয়া যাচ্ছে প্রতিদিনই। আশপাশের জমিও বেদখল হয়ে যাচ্ছে। ওই স্থানে জজ আদালত ভবন নির্মাণের কথা রয়েছে। তবে কবে নাগাদ তা বাস্তবায়ন করা হবে, এখনো তার দিনক্ষণ নির্ধারণ করা হয়নি।
বিজ্ঞাপন
স্থানীয় ব্যক্তিরা অভিযোগ করে বলেন, ১৩ বছর ধরে সরকারি একটি স্থাপনার মালামার চুরি হচ্ছে বিরামহীনভাবে। সরকারি এসব সম্পদ সময়মতো নিলামে বিক্রি করলেও সরকারের ঘরে অনেকগুলো টাকা জমা হতো। বরং নেশাখোরদের চুরির সুযোগ দিয়ে পুরো পরিবেশটাই দূষিত করে তোলা হয়েছে।
পরিত্যক্ত কারাগারটি অনেকটা অভিভাবকহীন অবস্থায় পড়ে রয়েছে। এ কারণেই হরিলুট হয়ে যাচ্ছে মূল্যবান মালামাল। কারাগারের সরকারি এসব মূল্যবান সম্পদ দেখার দায়িত্ব আসলে কার, এমন প্রশ্ন উঠেছে জনমনে।
এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার ও জুডিশিয়াল শাখার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফিরোজ হোসেন বলেন, পুরোনো কারাগারের জায়গায় জজ আদালত ভবন নির্মাণ করা হবে। নির্মাণকাজ শুরুর আগ পর্যন্ত গণপূর্তরই এটা সংরক্ষণ করার কথা।
গণপূর্ত বিভাগের প্রকৌশলী সফিকুর রহমান বলেন, কর্তৃপক্ষ আমাদের ওই পরিত্যক্ত কারাগার বুঝিয়ে দেয়নি। আমাদের কাছে পুরোনো কারাগারের কোনো চাবি নেই। সেই হিসাবে এখন জেলারের দায়িত্বে এই পরিত্যক্ত কারাগার।
চুয়াডাঙ্গা জেলা কারাগারের জেলার শওকত হোসেন মিয়ার বলেন, এটি যেহেতু গণপূর্তের জায়গা, স্থাপনাও গণপূর্তের দায়িত্বে থাকার কথা। আমরা যখন ওই পরিত্যক্ত পুরোনো কারাগার ছেড়ে দিয়ে নতুন কারাগারে কার্যক্রম শুরু করেছি, তখন গণপূর্তকে নিশ্চয় চিঠি দিয়ে অবগত করা হয়েছে। অথচ গণপূর্ত দায়িত্ব এড়িয়ে চাবি দেওয়া হয়নি বলছে।
সমন্বিত উদ্যোগ ও দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে এ সমস্যার সমাধান করবে সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো, এমনটাই প্রত্যাশা স্থানীদের।
এনএ