কুষ্টিয়া পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম ও তার স্ত্রী এবং সার্ভেয়ার আব্দুল মান্নানের স্ত্রীর নামে পৃথক দুটি মামলা করেছে দুদক। তাদের বিরুদ্ধে সম্পদ বিবরণীতে মিথ্যা তথ্য ও আয়ের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ অর্থ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কুষ্টিয়ার উপ-পরিচালক মো. জাকারিয়া। 

মঙ্গলবার (২৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের কুষ্টিয়ার উপ-সহকারী পরিচালক নীল কমল পাল বাদী হয়ে মামলা দুটি করেন।

এতে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ২০০৪ এর ২৮(২) ও ২৭(১) ধারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারা ও দণ্ডবিধির ১০৯ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, দুর্নীতি দমন কমিশনের সম্পদ বিবরণীতে কুষ্টিয়া পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম ৩৬ লাখ ২ হাজার ৬৪১ টাকা ৩০ পয়সা হিসাব দাখিল করেছেন। জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ ৫২ লাখ ১৯ হাজার ৫৭৩ টাকা ২৯ পয়সা সম্পদ অর্জন ও দখলে রাখাসহ হস্তান্তর/রূপান্তর/স্থানান্তর করার অপরাধ করেছেন। অন্যদিকে তার স্ত্রী মোছা. কামরুন্নাহার তার স্বামীর অবৈধ অর্থকে বৈধ করার কাজে সহায়তা করেছেন।

একইভাবে কুষ্টিয়া পৌরসভার সার্ভেয়ার মো. আব্দুল মান্নানের স্ত্রী মোছা. রুপালী খাতুন তার দাখিল করা সম্পদ বিবরণীতে ৫২ লাখ ৭৩ হাজার ১৯৩ টাকা ৮৫ পয়সা সম্পদের ভিত্তিহীন তথ্য দিয়েছেন। জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ ৭২ লাখ ৩২ হাজার ২৪৮ টাকা ৮০ পয়সা সম্পদ অর্জন ও দখলে রাখাসহ হস্তান্তর/রূপান্তর/স্থানান্তর করার অপরাধ করেছেন।

দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের কুষ্টিয়ার উপ-পরিচালক মো. জাকারিয়া বলেন, মামলার অভিযোগের বিষয়ে পূর্ণ তদন্ত হবে।

সমন্বিত জেলা দুর্নীতি দমন কমিশন কুষ্টিয়ার কৌঁসুলি অ্যাডভোকেট আল মুজাহিদ মিঠু মামলার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, দুদকের সব মামলা চূড়ান্তভাবে আদালতে পাঠানোর আগে খুব বিচক্ষণতার সঙ্গে তদন্তকারী কর্মকর্তারা তদন্ত করেন। শুধু যেসব ক্ষেত্রে সত্যতা আছে বলে প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয় সেগুলোই মামলা হিসেবে রুজু করা হয়। এই মামলার ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। বিজ্ঞ আদালত যে আদেশ দেন সেই অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেবেন সংশ্লিষ্ট দুদক কর্মকতারা।

কুষ্টিয়া সচেতন নাগরিক কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল আলম টুকু ঢাকা পোস্টকে বলেন, সরকারের প্রায় প্রতিটি প্রকল্পে দুর্নীতি হয়। দুর্নীতি বন্ধ হচ্ছে না। দুর্নীতি বন্ধের জন্য সরকারের পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। এ ধরনের দুর্নীতি সম্পর্কে নতুন করে বলার কিছু নেই। সরকারের উচিত দফতরগুলোতে সচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা। দুর্নীতি দমনের ক্ষেত্রে সরকারকে আরও কঠোর হতে হবে। 

রাজু আহমেদ/এসপি