সড়কে ছুটে চলেছে অসংখ্য যানবাহন। আর সেসব যানবাহনগুলোর সামনে গিয়ে দাঁড়াচ্ছে দুটি হাতি। প্রায় প্রতিটি ‍যানবাহন থেকেই হাতির মাধ্যমে নেওয়া হচ্ছে টাকা। না দিলে কোনো ভাবেই সরতে চায় না হাতি দুটি। ট্রাক, মোটরসাইকেল, পথচারী ও বিভিন্ন দোকানের  সামনে গিয়ে হাতি দুটি শুঁড় তুলে সালাম দিচ্ছে। পরে টাকা নিচ্ছে। আর এটাকে তারা বলছে হাতির বকশিশ!  

বৃহস্পতিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) এমনই চিত্র দেখা গেলো ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলার নেকমরদ এলাকায়। 

সরেজমিনে দেখা যায়, দুটি হাতির পিঠে বসে আছেন রাজু ও আব্দুল বাতেন নামের দুই মাহুত। হাতি দুটির তাদেরই। রাস্তার বিভিন্ন যানবাহনে থাকা যাত্রী ও পথচারীদের কাছ থেকে হাতির শুঁড় উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকা যাত্রী ও চালকের কাছ থেকে জোরপূর্বক চাঁদা আদায় করছেন তারা। টাকা না দেওয়া পর্যন্ত কোনো গাড়ি ও পথচারীকেই ছাড়ছে না। রাস্তায় যানবাহন থামিয়ে টাকা নেওয়ার কারণে দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন এলাকাবাসী।

নেকমরদ এলাকার বাস চালক ইব্রাহীম বলেন, বাস নিয়ে বের হওয়ার সময় হাতিটি বাস আটকে দেয়। মাহুত সালামির জন্য আমাকে কিছু টাকা দিতে বলার পর উপায় না দেখে হাতির শুঁড়ে ২০ টাকা গুঁজে দিই। কিন্তু হাতিটি টাকা ফেলে দেয়। পরে ৫০ টাকা দিয়ে ছাড়া পাই।

আব্দুল হাই নামের আরেক পথচারী বলেন, বাজার থেকে বাসার দিকে যাচ্ছিলাম। হঠাৎ হাতিটি আমার সামনে এসে দাঁড়াল। পরে তার পিঠে থাকা একটি ছেলে বলছেন টাকা দেন। প্রথমে ১০ টাকা দিলে হাতিটি নিতে চায় না। পরে হাতির পিঠে থাকা ছেলেটি বলে ৫০ টাকা না দিলে হাতি নিবেনা। কোনো উপায় না পেয়ে দিতে হয়েছে।

হাতির মাহুত আবদুল বাতেন ও রাজু বলেন, রানীশংকৈলে দুটি হাতি নিয়ে পায়ে হেঁটে এসেছেন তারা। পথে দোকানে দোকানে গিয়ে সালাম দেওয়ার পর লোকজন যা দেন তা নিয়ে নেন। তবে জোর করে টাকা নেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেন তিনি। সবাই খুশি হয়ে যা দিচ্ছে তাই নিচ্ছি। এটাকে চাঁদাবাজি বলে না। এটা হাতির জন্য বকশিশ।

রাণীশংকৈল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জাহিদ ইকবাল বলেন, বিষয়টি নিয়ে কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। যদি এ ধরনের কোনো অভিযোগ পাই তাহলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নাহিদ রেজা/আরআই