রাজবাড়ীতে আবারও পদ্মার ভাঙন দেখা দিয়েছে। পদ্মার পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে সপ্তাহের ব্যবধানে নদীর ডানতীর প্রতিরক্ষা প্রকল্পে তৃতীয় বারের মতো ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙন অব্যাহত থাকায় হুমকিতে রয়েছে শহর রক্ষা বাঁধ।

শুক্রবার (০১ অক্টোবর) বিকেল ৪টা থেকে রাজবাড়ী পৌর এলাকার ৯ নং ওয়ার্ড এবং সদরের মিজানপুর ইউনিয়নের সিলিমপুর এলাকায় শুরু হয়েছে ভাঙন। সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত হলেও ভাঙন অব্যাহত থাকে। ভাঙনের কবলে পড়ে প্রায় ২০০ মিটার এলাকা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।

সরেজমিনে ভাঙন এলাকায় দেখা যায়, বেশ কয়েকটি বসতভিটা ইতোমধ্যে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে আরও ৫০-৬০টি বসতভিটা। নদীপাড়ের মানুষের মধ্যে বিরাজ করছে আতঙ্ক। তারা এখন ঘরের আসবাবপত্র অন্যত্র সরিয়ে নিতে ব্যস্ত। 

পৌর এলাকার ৯ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা আলম ব্যাপারী বলেন, আমার দীর্ঘ দিনের বসতভিটা আজ নদী ভাঙনের কবলে পড়েছে। বাড়ির আসবাবপত্র দ্রুত অন্যত্র সরিয়ে নিছি। ঘরের কিছু অংশ ভাঙা হয়েছে, বাকিটা নদীর পেটে গেছে।

আরেক বাসিন্দা আয়নাল শিকদারের বক্তব্য একই রকম। তিনি বলেন, আজ দুপুর থেকে ভাঙনের ফলে হুমকির মুখে পড়েছে আমার বসতভিটা। দ্রুত অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা করছি। আমরা জানি না এরপর কোথায় থাকব? কী খাব?

একই এলাকার নাসরিন বেগম বলেন, আমার বিয়ের পর এসে দেখেছি নদী অনেক দূরে ছিল। ভাঙতে ভাঙতে এখন আমাদের বসতভিটাও নদীতে চলে যাচ্ছে। আমাদের যাওয়ার আর কোনো জায়গা নেই।

মিজানপুর ইউনিয়নের সিলিমপুর এলাকার বাসিন্দা শরীফ শেখ বলেন, নদীর ডানতীর রক্ষা প্রকল্পের কাজে অনিয়ম থাকায় ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে। নদীর তীব্র ভাঙনে এখন শহর রক্ষা বাঁধ হুমকির মুখে রয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আরিফুর রহমান অঙ্কুর ঢাকা পোস্টকে জানান, পদ্মায় পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে সৃষ্টি হয়েছে প্রচণ্ড ঢেউ। এতে সিসি ব্লকের নিচের মাটি সরে গেছে। সিসি ব্লক দেবে গিয়ে এই ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে। ভাঙন কবলিত স্থানে জরুরি ভিত্তিতে বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে।

মীর সামসুজ্জামান/এসপি