দেশের অন্যতম ব্যস্ত নৌপথ পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া। যেকোনো উৎসব এলেই দক্ষিণাঞ্চলের যাত্রী ও যানবাহনের চাপ বাড়ে এ রুটে। আসন্ন দুর্গাপূজা উপলক্ষে গতকাল থেকে অনেকে গ্রামের বাড়ি যাচ্ছেন। তার প্রভাব পড়েছে ঘাটে। শুক্রবার সকাল থেকে যাত্রীবাহী যানবাহনের চাপ বেশি দেখা গেছে। ঘাটে আটকা পড়েছে পণ্যবাহী প্রচুর ট্রাক।

পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌপথে ছোট-বড় মিলে ২০টি ফেরি আছে। তবে দুটি ফেরি বিকল থাকায় এখন ১৮টি ফেরি দিয়ে যাত্রী ও পরিবহন পারাপার করা হচ্ছে। যানবাহনের চাপ সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে কর্তৃপক্ষকে। 

শুক্রবার (৮ অক্টোবর) বেলা ১১টার দিকে পাটুরিয়া ফেরিঘাট এলাকা ঘুরে যাত্রীবাহী বাস, ব্যক্তিগত ছোট গাড়ি এবং পণ্যবাহী ট্রাকের দীর্ঘ সারি দেখা গেছে। ঘাটের জিরো পয়েন্ট থেকে ঢাকাগামী সড়কের আরসিএল মোড় ছাড়িয়ে গেছে বাসের সারি। ঘাট থেকে ঢাকামুখী সড়কে ফায়ার স্টেশন পর্যন্ত রয়েছে পণ্যবাহী ট্রাকের দীর্ঘ সারি। অন্যদিকে উথুলী সংযোগ মোড় থেকে আরিচামুখী সড়কে কয়েক শতাধিক ট্রাক ঘাটে আসার অপেক্ষায় রয়েছে। মোট ৮ শতাধিক যানবাহন এই নৌপথ পার হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে।

যশোরগামী ট্রাকচালক দুলাল মিয়া বলেন, ঘাটে যানবাহনের ভিড়ে থাকতে থাকতে জীবন শেষ। বাস আর ছোট গাড়ির চাপে আমরা ফেরিতে ওঠার সুযোগ পাই না। সারা বছরই আমাদের ঘাটে ভোগান্তি পোহাতে হয়। বাস ও ছোট গাড়ির জন্য ট্রাক কম পার করছে কর্তৃপক্ষ।

আরেক ট্রাকচালক হাবিব মিয়া বলেন, গতকাল রাতে ঘাটে এসেছি, এখনো ফেরিতে উঠতে পারলাম না। ঘাটে গাড়ির প্রচুর চাপ। প্রচণ্ড গরমে গাড়িতে বসে থাকাও দুষ্কর। আধা ঘণ্টার নৌপথ পার হতে ৮-১০ ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে।

গোল্ডেন লাইন বাসের চালক হাফিজউদ্দিন বলেন, ছুটির দিন আর পূজার কারণে ঘাটে গাড়ির চাপ বেশি। দুই ঘণ্টা ধরে সিরিয়ালে আছি। এখনো ফেরির দেখা পাইনি।

ফরিদপুরগামী বাসের যাত্রী লক্ষ্মী রানী বলেন, দীর্ঘদিন করোনার কারণে ঘরবন্দি জীবন পার করছি। সামনে দুর্গাপূজা। তাই পরিবারের সঙ্গে পূজার আনন্দ ভাগাভাগি করতে গ্রামের বাড়ি যাচ্ছি। 

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন করপোরেশন আরিচা কার্যালয়ের উপ-মহাব্যস্থাপক (বাণিজ্য) মো. জিল্লুর রহমান বলেন, ছুটির দিন আর সামনে পূজার কারণে সকাল থেকে ঘাট এলাকায় দক্ষিণাঞ্চলের যাত্রী ও যানবাহনের বাড়তি চাপ রয়েছে। তবে যাত্রী ভোগান্তির বিষয়টি বিবেচনা করে বাস ও ছোট গাড়ি আগে পার করায় ঘাটে আটকে পড়েছে পণ্যবাহী ট্রাক। এতে ট্রাকচালকরা কিছুটা ভোগান্তিতে পড়েছেন। বাস ও ছোট গাড়িগুলো এক থেকে দুই ঘণ্টা অপেক্ষার পর নদী পার হতে পারছে।

সোহেল হোসেন/এসপি/জেএস