অবৈধ সম্পদের অর্জন ও দখলের অভিযোগে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুর রশিদের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

সোমবার (১১ অক্টোবর) দুপুরে কুষ্টিয়া দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে মামলাটি করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কুষ্টিয়া দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. জাকারিয়া। 

আব্দুর রশিদ (৫৬) রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার নারায়ণপুর গ্রামের মৃত রওশন আলী মণ্ডলের ছেলে। বর্তমানে তিনি কুষ্টিয়া শহরের থানা পাড়া এলাকার চাঁদ মহাম্মদ রোডে বসবাস করেন। 

দুদক সূত্রে জানা গেছে, কুমারখালী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুর রশিদের কর্মজীবনের জ্ঞাত আয় বহির্ভূত ৩৩ লাখ ৯৫ হাজার ৩২৬ টাকার সম্পদ অর্জনের সত্যতা পেয়েছে দুদক। 

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, অনুসন্ধানকালে ২০১০-১১ করবর্ষ থেকে ২০২০-২১ করবর্ষ পর্যন্ত তার নিজ নামে বা তার পক্ষে অন্য কোনো নির্ভরশীল ব্যক্তির নামে অর্জিত স্থাবর, অস্থাবর, দায়দেনা ও সম্পদ অর্জনের উৎস সংক্রান্ত রেকর্ডপত্র পর্যালোচনা করা হয়। তাতে অপরাধমূলক অসদাচরণের মাধ্যমে কর্মজীবনের জ্ঞাত আয় বহির্ভূত ৩৩ লাখ ৯৫ হাজার ৩২৬ টাকার সম্পদ অর্জনের তথ্য পাওয়া যায়। ওই সম্পদ অর্জনের উৎসের বিষয়ে আব্দুর রশিদ সন্তোষজনক ব্যাখ্যা দিতে ব্যর্থ হন। 

আসামির দখলে থাকা সম্পত্তির মধ্যে ৩৩ লাখ ৯৫ হাজার ৩২৬ টাকার সম্পত্তি জ্ঞাত আয় বহির্ভূত। অপরাধ সংগঠিত হয়েছে বলে প্রতীয়মান হওয়ায় তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয়)।

২০০৪ সালের দুর্নীতি দমন কমিশন আইনের ২৭(১) ধারা তৎসহ ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনে মামলাটি করা হয়েছে। কুষ্টিয়া জেলা কার্যালয়ের উপসহকারী পরিচালক নীলকমল পাল বাদী হয়ে মামলাটি করেছেন।

কুষ্টিয়া দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. জাকারিয়া ঢাকা পোস্টকে বলেন, আইন অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সমন্বিত জেলা দুর্নীতি দমন কমিশন (সজেকা) কুষ্টিয়ার কৌঁসুলি অ্যাডভোকেট আল মুজাহিদ হোসেন মিঠু মামলার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, দুদকের সব মামলা চূড়ান্তভাবে আদালতে পাঠানোর আগে নিবিড় পর্যবেক্ষণ ও বিচক্ষণতার সঙ্গে তদন্তকারী কর্মকর্তারা তদন্ত করেন। শুধু তদন্তে সত্যতা প্রমাণিত হলে চূড়ান্ত মামলা হিসেবে আদালতে দাখিল করা হয়। এই মামলার ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। সোমবার বিজ্ঞ আদালত মামলাটি আমলে নিয়েছেন। আদালতের আদেশ অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেবেন সংশ্লিষ্ট দুদক কর্মকতারা।

এ বিষয়ে মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আব্দুর রশিদ জানান, দীর্ঘ দিন চাকরি জীবনে আমার নামে এমন কোনো অভিযোগ আসেনি। তবে এখন হঠাৎ কেন এই সামান্য টাকার গরমিল হলো বিষয়টি নিয়ে আমি তাদের সঙ্গে কথা বলব।

দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সমন্বিত জেলা কার্যালয় কুষ্টিয়ার উপ-পরিচালক মোহাম্মদ জাকারিয়া বলেন, প্রাথমিকভাবে দুর্নীতি এবং অনিয়মের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুর রশিদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। মামলার বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট আদালতে মামলার নথি পাঠানো হয়েছে। এখন পূর্ণাঙ্গ তদন্ত হবে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে বিশেষ আদালতে তার বিচার কাজ শুরু হবে।

রাজু আহমেদ/এসপি