বাগেরহাটের চিতলমারীতে হয়রানিমূলক মামলা ও বাড়ি ঘর লুটপাটের প্রতিবাদে মানববন্ধন 

বাগেরহাটের চিতলমারীতে একই পরিবারের দুই শিশুকে হত্যা করে প্রতিবেশীদের বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক মামলা ও বাড়ি ঘর লুটপাটের প্রতিবাদে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। শনিবার (২৩ জানুয়ারি) দুপুরে চিহ্নিত হত্যাকারীদের বিচার ও নিরাপরাধ ব্যক্তিদের মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার দাবিতে দুই শতাধিক এলাকাবাসী এ মানববন্ধন করেন।

মানববন্ধনে বক্তব্য দেন- বাগেরহাটের চাঞ্চল্যকর শিশু খালিদ ও রিফাত হত্যা মামলার আসামি মুক্তিযোদ্ধা শাহজাহান তালুকদার বাদশা, সাইদুর রহমান, মেরিনা বেগম, সবুর তালুকদার, রহিমা বেগম, স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা মো. আইয়ুব আলী, সোবহান শেখ, মো. মিজানুর রহমান, বাবর আলী তালুকদার, শিহাব তালুকদারসহ আরও অনেকে।

বক্তারা বলেন, ২০১৯ সালে চিতলমারী উপজেলার চৌদ্দহাজারি গ্রামের কাউছার তালুকদার ও তার ভাই মান্নান তালুকদার প্রতিবেশীদের ফাঁসাতে নিজের পরিবারের দুই শিশু খালিদ ও রিফাতকে হত্যা করে। পরবর্তীতে খালিদ হত্যা মামলায় কাউছার তালুকদার মুক্তিযোদ্ধা শাহজাহান তালুকদার বাদশার পরিবারের ১৯ সদস্যের নামে মামলা দেয়। রিফাত হত্যা মামলায়ও আরও ১৬ জনের নামে মামলা দেয়। দুটি মামলায় অনেকে জেল খেটেছে। বর্তমানে বেশিরভাগ আসামি জামিনে রয়েছে। কিন্তু বাদীদের অত্যাচারে বাড়িতে ফিরতে পারছেন না।

রিফাত হত্যা মামলার তদন্তকারী সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) বাগেরহাট কার্যালয়ের প্রেস ব্রিফিংয়ে রিফাত হত্যা মামলার রহস্য উন্মোচন করেন। এ সময় খুলনা বিভাগীয় প্রধান বিশেষ পুলিশ সুপার আতিকুর রহমান মিয়া জানান, জমিজমা নিয়ে বিরোধ থাকায় একই বংশের প্রতিপক্ষকে ফাসাঁতে রিফাতুল তালুকদারকে হত্যা করে রিফাতের চাচাতো ভাই ইকবাল তালুকদার ও সাকিব তালুকদার। মান্নান তালুকদারের ভাইয়ের ছেলে ইকবাল, সাকিব ও আত্মীয় হাফিজুর রহমান নিম্ন আদালতে হত্যার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছে।

বক্তারা আরও বলেন, এটা দিনের মতো স্পষ্ট, স্থানীয়দের ফাঁসাতে রিফাতকে হত্যা করেছে তার পরিবার। তারপরও রিফাত হত্যা মামলার আসামিদের মামলা থেকে অব্যাহতি দিচ্ছেন না পুলিশ। আমাদের ফাঁসাতে খালিদকেও একইভাবে হত্যা করেছে তার পরিবার।

কাউছার তালুকদার ও তার ভাই শুধু তার প্রতিবেশী মুক্তিযোদ্ধা শাহজাহান তালুকদার বাদশার বাড়ি-ঘর লুট ও ঘের দখল করেনি স্থানীয় অর্ধশতাধিক মানুষের বাড়ি-ঘর লুট করেছেন। হত্যা মামলার আসামি দেওয়ার ভয় দেখিয়ে অনেকের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ চাঁদা তুলেছেন। যারা চাঁদা দেয়নি তাদের মারধর করেছেন। এমনকি অনেককে মামলার আসামিও করেছেন। মূল হত্যাকারীদের বিচারের আওতায় এনে নিরাপরাধ ব্যক্তিদের অব্যাহতি দিয়ে এলাকায় শান্তি ফিরিয়ে আনার দাবি জানান তারা।

স্থানীয় ইউপি সদস্য মিজানুর রহমান বলেন, পিবিআই ও সিআইডি হত্যার রহস্য উন্মোচন এবং হত্যাকারীদের চিহ্নিত করার পরও যারা হত্যার সঙ্গে জড়িত নয় তাদের অব্যাহতি দেওয়া হচ্ছে না। বরং কাউছার তালুকদার ও তার ভাইয়েরা এই হত্যাকাণ্ডকে পুঁজি করে স্থানীয়দের ওপর অত্যাচার করে যাচ্ছে।

এসপি