নিখোঁজ দুই জেলের মরদেহের সন্ধান মেলেনি, অপরজন ভারতে
নিখোঁজ দুই জেলে মিজান ও রতন (ফাইল ছবি)
সুন্দরবনে বাঘের আক্রমণের ঘটনার দুইদিন পার হলেও দুই জেলের মরদেহের এখনও কোনো সন্ধান মেলেনি। তবে অপর জেলের সন্ধান মিলেছে। তাকে উদ্ধারের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছে বিজিবি।
নিহত দুই জেলে হলেন- সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার কৈখালী ইউনিয়নের পশ্চিম কৈখালী গ্রামের কফিলউদ্দিনের ছেলে রতন (৪২) ও একই গ্রামের মনোমিস্ত্রীর ছেলে মিজানুর রহমান (৪০)। জীবিত থাকা অপর মৎস্যজীবী একই গ্রামের সাত্তারের ছেলে আবু মুসা (৪১)।
বিজ্ঞাপন
শ্যামনগর উপজেলার নীলডুমুর ১৭ বিজিবির সিও ইয়াছিন চৌধুরী জানান, বৃহস্পতিবার (২১ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় পশ্চিম সুন্দরবন সাতক্ষীরা রেঞ্জের বিপরীতে ভারতীয় অংশে পাইজুরি খালে (ম্যাপে নেই) ঘটনাটি ঘটেছে। শনিবার (২৩ জানুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত বাঘের আক্রমণে নিহত দুই জেলের কোনো সন্ধান মেলেনি। তবে জীবিত থাকা অপর জেলে মুঠোফোনের মাধ্যমে স্বজনদের সঙ্গে মাঝেমধ্যে যোগাযোগ করছেন।
তিনি আরও জানান, ঘটনাটি এমন দুর্গম এলাকায় ঘটেছে সেখানে কাউকে খুঁজে বের করাও কষ্টসাধ্য। বিএসএফের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করেছি। চাপ দিচ্ছি, অনুরোধ করছি। তারাও মানবিক হয়ে বিষয়টি দেখছেন বলে জানিয়েছেন। জীবিত থাকা জেলেকেও ফেরত আনার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। মরদেহ দুটিরও এখনও সন্ধান মেলেনি।
বিজ্ঞাপন
বৃস্পতিবার রাত ৮টার দিকে জেলে আবু মুসা তার স্ত্রীকে মুঠোফোনের মাধ্যমে জানান, রতন ও মিজানুরকে বাঘে ধরে মেরে ফেলেছে। আমি বেঁচে আছি। শ্যামনগরের কৈখালী সীমান্তের বিপরীতে ভারতের কালিতলা এলাকার পুল্লাদ নামে একজনের কাছে তিনি আছেন বলে জানান।
কৈখালী এলাকার জিএম আবুল কালাম শুভ জানান, আবু মুসার সঙ্গে ফোনে আমার কথা হয়েছে। তিনি কৈখালীর বিপরীতে ভারতের পুল্লাদ নামে এক ব্যক্তির কাছে রয়েছেন। তিনজন একটি নৌকায় ছিলেন। নৌকা থেকে দুইজন নামার পরই তাদের বাঘে আক্রমণ করে। নিরুপায় হয়ে তড়িঘড়ি করে নৌকা নিয়ে ওখান থেকে মুসা চলে যায় বলে জানিয়েছে।
কৈখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুর রহিম জানান, এখন মরদেহ দুটি উদ্ধার করা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। নিহত দুই পরিবারে চলছে আহাজারি। জীবিত থাকা জেলে আবু মুসাকেও উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। তিনি এখন ভারতে রয়েছে।
কৈখালী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান জিএম রেজাউল করিম বলেন, বাঘের আক্রমণে নিহত দুই জেলের মরদেহ উদ্ধারের সম্ভাবনা ক্ষীণ হয়ে আসছে। আমরা সবাই মরদেহ দুটি উদ্ধার ও জীবিত আবু মুসাকে ফিরিয়ে আনার দাবি করছি।
এ সকল ঘটনার মধ্যেই বিভিন্ন মাধ্যমে সংবাদ ছড়িয়েছে ভারতে চোরাচালান করতে গিয়ে বিএসএফের গুলিতে নিহত হয়েছেন দুই জেলে। মরদেহ দুটি বিএসএফ উদ্ধার করেছে ও অপরজনকে আটকে রেখেছে। তবে ঘটনাটি সত্য নয় জানিয়ে সীমান্তের নীলডুমুর ১৭ বিজিবির সিও ইয়াছিন চৌধুরী বলেন, বিএসএফের গুলিতে নিহত হলে বা তাদের মরদেহ উদ্ধার করে রাখলে সেটি অবশ্যই আমরা জানতাম। এটি গোপন করার মতো কিছু নয়। তাছাড়া অপর জেলেও বিএসএফের হাতে আটক নেই।
এসপি