নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার বাঙ্গালীপুর ইউনিয়নের হাড়িপাড়া গ্রামের পুরুষরা ঢোল-ঢাক বাজিয়ে ও নারীরা বাঁশ দিয়ে প্রয়োজনীয় সামগ্রী তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ করেন। দুর্গাপূজায় বিভিন্ন স্থানে ঢোল বাজাতে যাওয়ায় পুরুষশূন্য হয়ে পড়ে হাড়িপাড়া এলাকাটি।

ফলে একসময় এ পাড়ার বধূ, শিশু-কিশোররা দুর্গাপূজার আনন্দ থেকে বঞ্চিত হতো। গত কয়েক বছর থেকে ভাতের চাল থেকে এক মুষ্টি করে জমিয়ে পূজার আয়োজন করেছেন নারীরাই।

হাড়িপাড়া মণ্ডপে পূজা করতে আসা মনিকা রানী জানায়, গ্রামে ২৮টি ঘর আছে। বাড়ির কর্তারা না থাকায় আগে পূজা হতো না। কয়েক বছর থেকে পূজা হচ্ছে। আগে মাইক বাজতো না, লাইটিং ছিল না, সাধারণভাবে মণ্ডপ তৈরি হতো। তবে এবারে কমিটি এসবের ব্যবস্থা করছে।

পূরবী রানী জানান, টাকার জন্য পুরোনো মণ্ডপ ঘরটি ভেঙে পড়ার মতো অবস্থা। টিনের চালের ফুটো দিয়ে আকাশ দেখা যায়। বৃষ্টিতে মণ্ডপ ঘরের প্রতিমা নষ্ট হয়ে যায়। এরপরেও এবার আমরা সবাই মিলে মুষ্টির চাল জমিয়ে পূজার আয়োজন করেছি। আমাদের আবেদন মন্দিরের উন্নয়নে যেন সবাই এগিয়ে আসে।

হাড়িপাড়া পূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক গীতা রানী জানান, পূজা উপলক্ষে সরকারি অনুদানের চাল বিক্রি করে ১৪ হাজার টাকা পেয়েছি। এবারে পূজার আয়োজন প্রায় ৬০ হাজার টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। বাকি টাকা মুষ্টির চাল বিক্রি ও বিভিন্ন বিশিষ্টজনের দেওয়া অর্থ দিয়ে সমন্বয় করা হবে। টাকার ঘাটতি হলে আবার মুষ্টির চাল জমিয়ে দিয়ে তা পূরণ করা হবে।

নীলফামারী জেলা প্রশাসনের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এবারে জেলায় ৭৬৪ট মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। মণ্ডপগুলোতে পুলিশের টহল টিম সার্বক্ষণিক তদারকি করছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে দর্শনার্থীদের পূজামণ্ডপে আসার জন্য পূজা উদযাপন কমিটির পাশাপাশি উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় স্বাস্থ্য বিভাগ কাজ করছে।

রাফিন/এমএসআর