উপজাতী তরুণীকে ইভটিজিং করাকে কেন্দ্র করে কক্সবাজারের টেকনাফের হোয়াইক্যংয়ে বৌদ্ধবিহারে হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। এতে আহত হয়েছেন ১৫ জন ক্ষুদ্র জাতিসত্তার নারী-পুরুষ। রোববার (২৪ অক্টোবর) সন্ধ্যায় হোয়াইক্যং ইউপির কাটাখালী ১নং ওয়ার্ডের 'অরণ্য বৌদ্ধ বিহার'-এ হামলার ঘটনা ঘটে।

তবে ক্ষুদ্র জাতিসত্তার লোকজনের অভিযোগ, এ হামলার নেতৃত্ব দিয়েছেন স্থানীয় ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সভাপতি তোফায়েল সম্রাটসহ ২০ জন।

তাৎক্ষণিকভাবে আহতদের পরিচয় না মিললেও তাদের মধ্যে ১০ জন পুরুষ ও ৫ জন নারী রয়েছেন বলে জানা গেছে। যারা কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

পুলিশ ও স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, হোয়াইক্যং ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের কাটাখালী চাকমাপল্লিতে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর তরুণীকে ইভটিজিং করা নিয়ে বিচারে বসে বিতর্কিত ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সভাপতি তোফায়েল সম্রাট ও তার ভাই কায়সার। এ সময় নৃগোষ্ঠীর সদস্যদের সঙ্গে কথা-কাটাকাটির এক পর্যায়ে তাদের ওপর হামলা চালান ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। পরে তাদের মারধর ও অরণ্য বৌদ্ধবিহারে আগুন ধরিয়ে দেন বলে অভিযোগ করা হয়।

অরণ্য বৌদ্ধবিহারের কর্মকর্তা অন্তর চাকমা ঢাকা পোস্টকে বলেন, ছাত্রলীগ নেতা তোফায়েল ও তার ভাই কায়সার বিচারে এসেছিলেন। সেখানে কথা-কাটাকাটি নিয়ে তারা আমাদের বিহারে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছেন। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের নিয়ে হামলা চালিয়ে আমাদের ১৫ নারী-পুরুষকে আহত করেছেন।

হামলার বিষয়টি স্বীকার করে ১ নং ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সভাপতি তোফায়েল সম্রাট ঢাকা পোস্টকে বলেন, বিচারে কথা-কাটাকাটি নিয়ে উপজাতীদের মারধর করা হয়েছে। তবে বিহারে অগ্নিসংযোগের বিষয়টি মিথ্যা বলে দাবি করেন এ ছাত্রলীগ নেতা।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে হোয়াইক্যং পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মাহবুবুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যাই। সেখানে কিছু ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মানুষকে মারধর করা হয়েছে। বাকিটা আমি অবগত নই।

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পারভেজ চৌধুরী ঢাকা পোস্টকে বলেন, মূলত ইভটিজিংকে কেন্দ্র করে এ হামলার ঘটনা ঘটেছে। যেখানে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে, সেটা বৌদ্ধবিহারের একটি অংশ। তবে কারা অগ্নিসংযোগ করেছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

টেকনাফ উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুল ইসলাম মুন্না ঢাকা পোস্টকে বলেন, যে তোফায়েলের কথা বলা হচ্ছে, তাকে আমি চিনি না। সে যে কমিটিতে রয়েছে, সেটি অবৈধ। হোয়াইক্যংয়ে গ্রুপিং আছে, রবি ও রুহুল আমিনের কমিটি অবৈধ ঘোষণা করা হয় আরও আগে। তোফায়েলসহ যাদের নাম এসেছে, তারা ছাত্রলীগের কেউ নয় বলে দাবি করেন তিনি।

মুহিববুল্লাহ মুহিব/এনএ