টানা ছয় দিনের অনশনে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন আরেক শিক্ষার্থী

বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে আমরণ অনশনে বসা খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) আরও এক শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। অসুস্থ শিক্ষার্থী হলেন খুবির বাংলা ডিসিপ্লিনের মোহাম্মদ মোবারক হোসেন নোমান।

রোববার (২৪ জানুয়ারি) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাম্বুলেন্সে তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। টানা ছয় দিনের অনশনে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বলে অন্য শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন।

শনিবার (২৩ জানুয়ারি) দুপুরের পর থেকে ইমামুল ইসলাম অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে স্যালাইন দিয়ে রাখা হয়। তবে সন্ধ্যার পর আরও বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ায় রাতেই তাকে হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছিল। পরে ইমামুলের পরিবর্তে অনশনে বসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক শিক্ষার্থী জুবায়ের হোসেন।

এদিকে খুলনা সিটি করপোরেশনের এক প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুজন শিক্ষার্থীর অনশনের খবর জানতে পেরে খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক ২২ জানুয়ারি সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও শিক্ষকদের সঙ্গে নিয়ে অনশনরত শিক্ষার্থীদ্বয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এ সময় তিনি অনশনরত শিক্ষার্থীদের দাবি সম্পর্কে অবহিত হন। পরে আরও পাঁচজন শিক্ষার্থী মেয়রের সঙ্গে একান্তে কথা বলতে চাইলে তিনি তাদের কথাও মনোযোগসহকারে শোনেন।

সিটি করপোরেশন জানায়, উভয় পক্ষের কথা শুনে মেয়র অনশনরত দুই শিক্ষার্থীকে নিয়মানুযায়ী আত্মপক্ষ সমর্থনে দুঃখ প্রকাশ বা ক্ষমা চেয়ে কর্তৃপক্ষ বরাবর লিখিতভাবে আবেদন করার পরামর্শ দেন। আবেদন জমা দেওয়ার পর বিষয়টি বিবেচনা করে তাদের স্বাভাবিক শিক্ষাজীবন যেন চলমান থাকে, সে বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে অনুরোধ জানাবেন বলে শিক্ষার্থীদ্বয়কে মেয়র আশ্বস্ত করেন। বিষয়টি সার্বিক তত্ত্বাবধানের জন্য মেয়র নিজ প্রতিনিধি হিসেবে কেসিসির মেয়র প্যানেল সদস্য কাউন্সিলর মো. আলী আকবর টিপুকে দায়িত্ব প্রদান করেন।

প্রজ্ঞাপনে আরও জানানো হয়, মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেকের আহ্বানে সাড়া দিয়ে শিক্ষার্থীদ্বয় ‘সিটি মেয়রের’ মাধ্যমে উপাচার্য বরাবর একটি আবেদন জমা দিলেও আবেদনে তারা দুঃখ প্রকাশ বা ক্ষমা প্রার্থনা করেননি, যা ছিল অপ্রত্যাশিত। সর্বজনশ্রদ্ধেয় ব্যক্তি ও সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে মেয়র খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার আন্দোলন থেকে শুরু করে এর বিকাশের ধারায় আজ পর্যন্ত সব কাজে আন্তরিকভাবে সহযোগিতা করেছেন। এরই ধারাবাহিকতায় তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভূত পরিস্থিতির শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য নিজ উদ্যোগে চেষ্টা চালিয়েছেন। কিন্তু শিক্ষার্থীদের মনোভাব এবং তাদের আচরণে তিনি হতাশা ব্যক্ত করে বলেন, শিক্ষার্থীদ্বয়ের আবেদনটি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে চ্যালেঞ্জ করার শামিল। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে এর বিধিবিধান সমুন্নত রাখা সবার দায়িত্ব ও কর্তব্য বলে তিনি উল্লেখ করেন।

এ পরিস্থিতিতে প্রাতিষ্ঠানিক শৃঙ্খলা ও নিয়ম-কানুন প্রতিপালনের স্বার্থে শিক্ষকদের প্রতি নমনীয় হয়ে দুঃখ প্রকাশ বা ক্ষমা প্রার্থনা করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বরাবর পুনরায় আবেদন করার জন্য মেয়র অনশনরত দুজন শিক্ষার্থীর প্রতি আবারও আহ্বান জানিয়েছেন।

উল্লেখ্য, ১৯ জানুয়ারি সন্ধ্যার পর থেকে খুবির বাংলা ডিসিপ্লিনের মোহাম্মদ মোবারক হোসেন নোমান (১৮ ব্যাচ) এবং ইতিহাস ও সভ্যতা ডিসিপ্লিনের ইমামুল ইসলাম (১৭ ব্যাচ) ক্যাম্পাসের প্রশাসনিক ভবনের সামনে অনশনে বসেন।

এনএ