এক ঘণ্টার দায়িত্ব নিয়ে ধর্ষণকারীদের বিরুদ্ধে যা বলল অষ্টমণি লোহার
চা-শ্রমিক পরিবারের সন্তান অষ্টমণি লোহার। পড়াশোনা করছে নবম শ্রেণিতে। তবে এ বয়সে অন্যদের তুলনায় তার চিন্তা, কর্ম আর স্বপ্নের পরিধি বিস্তৃত। চা-বাগানের উঁচু-নিচু টিলায় বেড়ে উঠলেও নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে কাজ করার প্রত্যয় তার।
সোমবার (২৫ অক্টোবর) এক ঘণ্টার জন্য সমাজ সেবা অধিদপ্তর সিলেটের উপ-পরিচালকের দায়িত্ব নিয়ে সেই প্রত্যয় নতুন করে ব্যক্ত করে অষ্টমণি।
বিজ্ঞাপন
একই সঙ্গে সিলেট জেলাকে নারীবান্ধব করতে ও নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অনুরোধ জানায় অষ্টমণি লোহার। এসময় শিশু ধর্ষণকারীদের প্রকাশ্যে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করার প্রস্তাব দেয় এই শিক্ষার্থী।
এর আগে সোমবার (২৫ অক্টোবর) বেলা ১১টায় সমাজ সেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক নিবাস রঞ্জন দাশের কাছ থেকে প্রতীকী উপ-পরিচালকের দায়িত্ব গ্রহণ করে অষ্টমণি লোহার। এক ঘণ্টার জন্য তার অধীন হন সমাজ সেবা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। এসময় নিবাস রঞ্জন দাস তাকে ফুলের শুভেচ্ছা জানান।
বিজ্ঞাপন
আন্তর্জাতিক কন্যা দিবস উপলক্ষে সিলেট নগরের বাগবাড়ি এলাকায় প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের সহযোগিতা ও রিলায়েন্ট উইমেন ডেভেলাপমেন্ট অর্গানাইজেশনের উদ্যোগে এ আয়োজনটি করা হয়।
অনুষ্ঠানে অষ্টমণি লোহার বলে, নারীর প্রতি সহিংসতা দিন দিন বেড়ে চলছে। নারী ও কিশোরী নির্যাতনের প্রেক্ষাপটে আমি একজন মেয়ে হিসেবে এদেশের লাখ লাখ কিশোরীর মতো স্বপ্ন দেখি একটি সুস্থ, নিরাপদ পরিবেশ এবং সুন্দর সমাজের। সমাজ সেবা অধিদপ্তরকে আরও গতিশীল করতে সকলের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
এসময় উপ-পরিচালক নিবাস রঞ্জন দাশ বলেন, নারীদের বাদ দিয়ে কোনো সমাজের উন্নয়ন সম্ভব নয়। নারীদের নিয়েই আমাদের সমাজকে এগিয়ে নিতে হবে। নারীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে আমাদের সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
তিনি আরও বলেন, অসীম ক্ষমতার অধিকারী নারী। যেসব রাষ্ট্র নারীর ক্ষমতায়ন দিয়েছে তারাই এগিয়ে গেছে। তাই নারীর সুরক্ষা ও ক্ষমতায়ন না দিলে আমাদের উন্নয়ন টেকসই হবে না। সমাজ ব্যবস্থাকে ভালো রাখতে হলে পরিবারকে সবার আগে এগিয়ে আসতে হবে। সমাজের সকল নাগরিকের সমাজ সেবা কার্যালয় থেকে সমানভাবে সুযোগ সুবিধা নেওয়ার অগ্রাধিকার রয়েছে।
তিনি বলেন, ভবিষ্যতে আমাদের অনেক কিছু করাই সম্ভব হবে না। এ প্রজন্মই পারে বাংলাদেশকে পরিবর্তন করতে। চা শ্রমিক সন্তানরা তাদের অবস্থানের কারণে দূরদর্শী চিন্তা করে না। তাদের মধ্যে থেকেই যে রাষ্ট্রনায়ক তৈরি সম্ভব সেই স্বপ্ন দেখানোর কেউ নেই। তাদেরকে সেই স্বপ্নটাই দেখাতে হবে। আমরা আমাদের শিশুদের স্বপ্নবাজ তৈরি করতে পারি না। তাদের স্বপ্নটাকে আরও বিস্তৃত করতে হবে।
তুহিন আহমদ/এমএএস