বিত্তশালী মেয়েদের টার্গেট করত জামাল, অবশেষে ধরা
নাম তার জামাল হোসেন (৩০)। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন রূপ ধারণ করে একাধিক বিয়ে এবং টাকা হাতিয়ে নেওয়াই তার নেশা। একেক স্থানে একেক নাম ব্যবহার করে দীর্ঘদিন মানুষের চোখে ধুলো দিয়ে প্রতারণা করে আসছিলেন তিনি। তবে শেষ রক্ষা হয়নি তার। চাঁদপুর মডেল থানা পুলিশের হাতে অবশেষে আটক হয়েছেন তিনি।
সোমবার (২৫ অক্টোবর) দুপুরে চাঁদপুর সদরের ওয়ারলেস বাজার এলাকা থেকে তাকে আটক করে পুলিশ। জামাল কচুয়া উপজেলার সুবিদপুর ইউনিয়নের মাওলানা মো. সফিকুল ইসলামের ছেলে।
বিজ্ঞাপন
পুলিশ ও ভুক্তভোগীরা জানান, জামাল বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন নাম ব্যবহারের মাধ্যমে প্রতারণা করে আসছিল। চাকরি ও বিভিন্ন সংস্থা থেকে ঘর পাইয়ে দেওয়ার নাম করে টাকা হাতিয়ে নিত সে। শুধু তাই নয়, ভুয়া বাবা-মা সাজিয়ে পাত্রী দেখে বিয়ে করত। এক সময় তাদেরকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি দিয়ে টাকা আদায় করত। চাঁদপুর শহরের ওয়ারলেস বাজারের মুদি দোকানি সামছুল আলমের কাছ থেকে গত ১৯ অক্টোবর দেড় লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয় সে। একইভাবে বিলকিস বেগম নামে আরেক নারীর কাছ থেকে এক লক্ষ টাকা নেয়। ঢাকা, হাজীগঞ্জ ও চাঁদপুর শহরে মোট ৩টি বিয়ে করেছে জামাল।
জামালের শ্বশুর সেকান্তর মাল বলেন, জামাল একজন প্রতারক। সে আমাদের সঙ্গে প্রতারণা করেছে। জামাল প্রথমে নাম-ঠিকানা গোপন রাখে। ভুয়া বাবা-মা দেখিয়ে গত ২২ অক্টোবর আমার মেয়েকে বিয়ে করে। কত বড় প্রতারক হলে এমন কাজ করতে পারে। থানায় এসে দেখি, কত মানুষ তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে। আমরাও তার শাস্তি দাবি করছি।
বিজ্ঞাপন
জামালের প্রতারণার শিকার এক মেয়ে বলেন, প্রেমের অভিনয় করে মেয়েদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়া তার কাজ। বিত্তশালী মেয়েদের টার্গেট করে প্রতারণার ফাঁদ পাতে জামাল।
ওয়ারলেস বাজারের ব্যবসায়ী সামছুল বলেন, জামাল খুব স্মার্টভাবে চলাফেরা করে। মানুষকে সাহায্য সহযোগিতার আশ্বাস দেয়। তার কথা বিশ্বাস করে অনেকে নিঃস্ব হয়েছে। তাদের মধ্যে আমি একজন। জাপানের একটি সংস্থা নাকি কিছু টাকার বিনিময়ে বাড়ি করে দেয়। তাই আমিও সেই আশায় জামালকে দেড় লক্ষ টাকা দেই কিন্তু জামাল মিথ্যে বলে আমার টাকা আত্মসাৎ করেছে। আমি ও বিলকিস নামের এক নারী থানায় অভিযোগ করেছি। পুলিশ তাকে আটক করেছে।
চাঁদপুর মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুর রশিদ বলেন, জামাল কয়েকজনের কাছ থেকে টাকা আত্মসাৎ করেছে। এছাড়া একাধিক বিয়ে করারও অভিযোগ রয়েছে। সে বিভিন্ন কথা বলে মানুষের কাছ থেকে স্ট্যাম্পের মাধ্যমে টাকা নিত। এমন অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে আটক করা হয়েছে।
শরীফুল ইসলাম/আরআই