নিহত সজিব ও মারুফ

চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গায় মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত দুই বন্ধু সজিব ও মারুফকে পাশাপাশি দাফন করা হয়েছে। সোমবার (২৫ অক্টোবর) রাতে উপজেলার নতিডাঙ্গা দক্ষিণপাড়া কবরস্থানে তাদের দাফন করা হয়। উপজেলার বাড়াদি ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. ওবাইদুল হক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। 

তিনি বলেন, ময়নাতদন্ত ছাড়াই বিকেলে লাশবাহী গাড়িতে দুজনের মরদেহ নিজ গ্রাম নতিডাঙ্গাতে পৌঁছালে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। তিন ভাইয়ের মধ্যে মারুফ ছোট এবং দুই ভাইয়ের মধ্যে সজিব ছোট। সন্তানদের হারিয়ে তাদের বাবা-মা যেন পাগল প্রায়। বার বার মূর্ছা যাচ্ছেন তারা। তারা দুজনই সপ্তগ্রাম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র ছিল।

ইউপি সদস্য মো. ওবাইদুল হক আরও বলেন,  রাত পৌনে ৮টার দিকে জানাজার পর মারুফের মরদেহ গ্রাম্য করবস্থানে দাফন করা হয়। পরে রাত ৯টার দিকে মারুফের কবরের পাশেই সজিবের মরদেহ দাফন করা হয়। 

এর আগে বেলা পৌনে ১১টার দিকে চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার হাজরাহাটি পটলা পীরের মাজারের কাছে দুই মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে দুইজন নিহত এবং তিনজন আহত হন। এ সময় হতাহতদের তাৎক্ষণিক পরিচয় না পাওয়া গেলেও দুপুরে পরিবারের সদস্যরা তাদেরকে শনাক্ত করেন। 

নিহতরা হলেন- আলমডাঙ্গা উপজেলার বাড়াদি ইউনিয়নের নতিডাঙ্গা গ্রামের দক্ষিণপাড়ার আকুব্বর হোসেনের ছেলে মারুফ হোসেন (২০) একই এলাকার শরিফের ছেলে সজিব (২০)। 

আহতরা হলেন- আলমডাঙ্গা উপজেলার বাড়াদি ইউনিয়নের আঠারোখাদা গ্রামের বিজয় মণ্ডলের ছেলে মদন কুমার দাস (৩৫), একই উপজেলার জেহালা গ্রামের ঠান্ডু রহমানের ছেলে আলমসাধু চালক আজিম উদ্দিন (৫০) এবং চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার শংকরচন্দ্র ইউনিয়ের কুকিয়া চাঁদপুর গ্রামের কুরবান আলীর ছেলে শাহিন আলী (২২)।

প্রত্যক্ষদর্শী ও পরিবারের সদস্যরা জানান, মারুফ ও সজিব দুই বন্ধু একটি মোটরসাইকেল নিয়ে মোবাইল ফোন মেরামতের জন্য চুয়াডাঙ্গা শহরে যাচ্ছিলেন। এ সময় চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার হাজরাহাটি পটলা পীরের মাজারের নিকট পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা মদন কুমার দাসের মোটরসাইকেলের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে তিনজনই পাকা রাস্তার ওপর ছিটকে পড়েন। এ সময় সড়কের একদিক থেকে আসা শ্যালো ইঞ্জিনচালিত আলমসাধুর চালক মোটরসাইকেল আরোহীদের পড়ে যেতে দেখে জোরে ব্রেক করেন। 

এতে আলমসাধুটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশের একটি গাছের সঙ্গে ধাক্কা খায়। এতে আলমসাধুর চালক আজিমউদ্দিন ও যাত্রী শাহিন আহত হন। পরে স্থানীয়রা আহত পাঁচজনকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মারুফকে মৃত ঘোষণা করেন। এর কিছুক্ষণ পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় সজিবের মৃত্যু হয়। আহত তিনজনকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। 

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. উৎপলা বিশ্বাস বলেন, হাসপাতালে আনার আগেই একজনের মৃত্যু হয়েছে। এর কিছুক্ষণ পর আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া আরও তিনজন আহত হয়েছেন। তাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসিন বলেন, হাজরাহাটি পটলা পীরের মাজারের কাছে দুই মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় অপর মোটরসাইকেল ও আলমসাধু চালকসহ এক যাত্রী আহত হয়েছেন। অভিযোগ না থাকায় মরদেহ সুতরহাল শেষে বিকেলে দুই পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। 

আফজালুল হক/আরএআর