আ.লীগ-বিএনপির পর এবার জাতীয় পার্টিতে তিনি
২০১৬ সালের দিকে লালমনিরহাট সদর উপজেলার হারাটি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন রফিকুল ইসলাম। ওই সময় ইউপি নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী হতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু নৌকার মাঝি হন জেলা আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক সিরাজুল হক খন্দকার। দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিয়ে জয়ী হন রফিকুল ইসলাম।
সে সময় দল থেকে থেকে বহিষ্কার করা হলে তিনি বিএনপিতে যোগদান করেন। এবারের ইউপি নির্বাচনে দলীয় প্রতীক না রাখায় বিএনপি থেকে সরে গিয়ে যোগ দিয়েছেন জাতীয় পার্টিতে। দলটিতে যোগ দেওয়ার দিনই তাকে ইউপি নির্বাচনের জন্য দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয়। এ নিয়ে জেলাজুড়ে শুরু হয়েছে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা।
বিজ্ঞাপন
গত বুধবার বিকেলে ঢাকায় জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও লালমনিরহাট-৩ (সদর) আসনের সাংসদ গোলাম মোহাম্মদ কাদেরের হাতে ফুলের তোড়া দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে তিনি জাতীয় পার্টিতে যোগ দেন। এ সময় উপস্থিত থাকা নেতাদের সূত্রে জানা গেছে, পার্টির চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামের হাতে মনোনয়নের কাগজ তুলে দেন।
এদিকে এসব বিষয়ে জানতে চাইলে লালমনিরহাট জেলা জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব জাহিদ হাসান বলেন, রফিকুল ইসলাম যেকোনো দল করতে পারে। দলীয় সুযোগ-সুবিধা না পেয়ে তিনি দল পরিবর্তন করেছেন। তাছাড়াও তার জনসমর্থন অনেক। জনগণের জন্য তিনি অনেক কাজ করেছেন। তাই আশা করছি এবারও তিনি জয়ী হবেন।
বিজ্ঞাপন
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রয়াত এমপি আবু সাঈদের হাত ধরে রাজনীতিতে আসেন রফিকুল ইসলাম। ব্যাপক জনপ্রিয়তা নিয়ে তিনি জনগণের জন্য কাজ করেন। কিন্তু দলীয় সিদ্ধান্তে ইউপি নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী হতে চান তিনি। পরে সেই সিদ্ধান্ত উল্টে জেলা দফতর সম্পাদক সিরাজুল হক খন্দকারকে নৌকার মাঝি করেন। কিন্তু তিনি হাল ছেড়ে না দিয়ে স্বতন্ত্র (বিদ্রোহী) প্রার্থী হয়ে নৌকার সঙ্গে লড়াই করেন। ওই সময় ব্যাপক ভোটে তিনি নির্বাচিত হন।
তার জনপ্রিয়তা ধরে রাখতে ২০১৮ সালের ২৩ ডিসেম্বর রফিকুল ইসলাম বিএনপির রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও লালমনিরহাট-৩ (সদর) আসনের সাবেক সাংসদ আসাদুল হাবিবের হাতে ফুলের তোড়া দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে বিএনপিতে যোগ দেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক বিএনপি নেতা বলেন, তিনি যখনই শুনেছেন বিএনপি এবারের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না। তখন তিনি সরে গিয়ে জাতীয় পার্টিতে যোগদান করেন।
লালমনিরহাট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মতিয়ার রহমান বলেন, নিজের ব্যক্তিগত স্বার্থের জন্য যারা ঘন ঘন দল বদল করেন, তাদের রাজনৈতিক নীতি ও আদর্শ সুবিধাবাদীদের মতো।
এ বিষয়ে রফিকুল ইসলাম বলেন, যে যাই বলুক, আমি আমার জন্য কখনোই দলবদল করি না। জনগণের উন্নয়নের জন্য সবসময় দলবদল করে আসছি। বরাবরই আমি নির্বাচিত হয়েছি। এবার আশা করছি জনগণ আমাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবে।
নিয়াজ আহমেদ সিপন/এসকেডি