গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের কঞ্চিবাড়ি পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) তোফাজ্জল হোসেনকে আটক করে লাঞ্ছিত ও মারধরে ঘটনায় মামলা করেছে পুলিশ। মামলার পর পুলিশ অভিযান চালিয়ে ১৩ জনকে গ্রেফতার করেছে।

রোববার (৩১ অক্টোবর) দুপুর পর্যন্ত সুন্দরগঞ্জের শ্রীপুর ইউনিয়নের ধর্মপুর গ্রামে অভিযান চালিয়ে ১৩ আসামিকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

বিষয়টি নিশ্চিত করে সুন্দরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল্লাহিল জামান জানান, পুলিশ সদস‌্যকে আটক করে মারধর ও লাঞ্ছিতের ঘটনায় করা মামলায় ১৩ আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। রিমান্ডের আবেদন করে আসামিদের আদালতে পাঠানো হয়েছে। মামলার অন‌্য আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

এর আগে শনিবার (৩০ অক্টোবর) রাতে কঞ্চিবাড়ি পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের উপপরিদর্শক (এসআই) মো. মিজানুর রহমান বাদী হয়ে সুন্দরগঞ্জ থানায় মামলাটি করেন। 

মামলায় ধর্মপুর গ্রামের মাসুদ মিয়াকে প্রধান আসামি করে ২০ জন নামীয় ও অজ্ঞাত ৬০ থেকে ৭০ জনকে আসামি করা হয়। গ্রেফতার আসামিরা হলেন আবদুল খালেক, আমজাদ আলী, সুমন মিয়া, বকুল মিয়া, মকুল মিয়া, জহুরুল ইসলাম, শাহজাহান আলী, আবদুর রাজ্জাক, হামিদুল ইসলাম, রবিউল মিয়া, ইসলাম মিয়া, নাজমুল হক ও রাজু মিয়া। তাদের সবার বাড়ি ধর্মপুর গ্রামে।

মামলার বাদী এজাহারে উল্লেখ করেন, গত ২৯ অক্টোবর রাতে সাড়ে ৮টার দিকে একটি মামলার বাদী মৌসুমি আকতারের বাড়ি যান কঞ্চিবাড়ি পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) তোফাজ্জল হোসেন। পরে বাদীর অভিযোগ শুনে ফেরার সময় বাদী মৌসুমির ভাসুর মাসুদ এএসআই তোফাজ্জলকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করেন। এ সময় চিৎকার দিয়ে মাসুদ এলাকাবাসীকে একত্র করে তোফাজ্জলকে আটক করান।

এরপর মিথ‌্যা গুজব ছড়িয়ে তোফাজ্জলকে বাড়ির উঠানের আমগাছে বেঁধে মারধর করাসহ তার পকেটে থাকা নগদ টাকা ও হাতঘড়ি ছিনিয়ে নেয়। খবর পেয়ে পুলিশ তাকে উদ্ধার করতে গেলে এলাকাবাসী উত্তেজিত হয়ে হামলার চেষ্টা চালায়।

উল্লেখ্য, শুক্রবার (২৯ অক্টোবর) রাত সাড়ে ১০টার দিকে পারিবারিক মামলার তদন্ত করতে সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ছড়ারপাতা গ্রামের এক সৌদিপ্রবাসীর বাড়িতে যান এএসআই তোফাজ্জল হোসেন। অভিযোগ ওঠে, গোয়ালঘরে ‘আপত্তিকর অবস্থায়’ ওই বাড়ির এক নারীর সঙ্গে তাকে দেখে ফেলেন প্রতিবেশীরা। বিষয়টি জানাজানি হলে উত্তেজিত জনতা তোফাজ্জলকে আটক করে বাড়ির উঠানের একটি আমগাছের সঙ্গে দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে। পরে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে তোফাজ্জল হোসেনকে কঞ্চিবাড়ি পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র থেকে গাইবান্ধা পুলিশ লাইনে ক্লোজড করা হয়।

রিপন আকন্দ/এনএ