হঠাৎ করে গণপরিবহণ ও দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পর্যটন শহর কক্সবাজারে বেড়াতে এসে প্রায় ২০ হাজার পর্যটক আটকা পড়েছেন। গণপরিবহন বন্ধ থাকায় তারা নিজ গন্তব্যে ফিরতে পারেননি। কিন্তু পর্যটকদের চট্টগ্রাম পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে কক্সবাজার জেলা পুলিশ।

ইতোমধ্যে অর্ধশতাধিক পর্যটক নিয়ে কক্সবাজার ছেড়ে যাওয়ার সব প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। শনিবার (৬ নভেম্বর) বিকেল ৬টার দিকে ৪৬ জন পুলিশের যাত্রী তালিকায় নাম লিখিয়েছেন। আরও অনেকে পথে রয়েছেন।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাদিয়া ইসলাম শেফা ঢাকা পোস্টকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কয়েকজন এসেছি। শুক্রবার ভোরে, আজকে চলে যাওয়ার কথা। কিন্তু পরিবহন বন্ধ থাকায় আটকে গেলাম। কল্পনাও করতে পারেনি পুলিশ এমন উদ্যোগ নেবে। অবশেষে পুলিশের বাসেই ফিরছি বন্দর নগরী। সেখানে ট্রেনে করে চলে যাব।

কলাতলী-মেরিনড্রাইভ হোটেল-মোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মুকিম খান ঢাকা পোস্টকে বলেন, ধর্মঘটের কারণে আটকা পড়ে ২০ হাজার পর্যটক। পর্যটকরা খুবই দুঃশ্চিন্তায় ছিলেন। পুলিশের বাস সেবার সিদ্ধান্ত অনেক পর্যটক উচ্ছ্বসিত। পুলিশের এমন সিদ্ধান্তে তারা অনেক আনন্দিত। আমরাও বিষয়টি হোটেলে হোটেলে ছড়িয়ে দিয়েছি।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) রফিকুল ইসলাম জানান, গণপরিবহন ও দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পর্যটন শহর কক্সবাজারে বেড়াতে আসা প্রায় ২০ হাজার পর্যটক আটকে পড়েন। ফলে বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়েন তারা। সে বিবেচনায় নিজস্ব পরিবহনে পর্যটকদের ঢাকার উদ্দেশে চট্টগ্রাম পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুলিশ প্রশাসন।

অনেক পর্যটক অতিরিক্ত ভাড়ায় উড়োজাহাজে কক্সবাজার ত্যাগ করেছেন। যাদের সেই সামর্থ্য নেই তারা ছোট যানবাহনে কক্সবাজার ছাড়ার চেষ্টা চালাচ্ছেন। কিন্তু অন্য সময়ের চেয়ে ভাড়া দুই-তিনগুণ হওয়ায় তারা কক্সবাজার ত্যাগ করতে পারছেন না। 

সাপ্তাহিক ছুটির দিন হিসেবে বৃহস্পতি-শুক্র ও শনিবার হাতে রেখে কক্সবাজার আসেন লাখো পর্যটক। অনেকেই কক্সবাজার এসেছেন বৃহস্পতিবার। আবার শুক্রবার ভোরেও পৌঁছান অনেকে।

যারা শুক্রবার ফিরে যাওয়ার শিডিউলে ছিলেন তারা এসেছিলেন আরও কয়েক দিন আগে। এ রকম পর্যটক ২০ হাজার হবে বলে হোটেল সংশ্লিষ্টরা জানান। বাস চলাচল বন্ধ থাকায় তারা নির্ধারিত সময়ে কক্সবাজার ছেড়ে যেতে পারেননি।

জানা গেছে, জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর প্রতিবাদে শুক্রবার সকাল থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য গণপরিবহন, মালবাহী ট্রাক ও দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধের ঘোষণা দেয় পরিবহন সংগঠনের নেতারা। যার প্রভাব পড়েছে পর্যটন নগরী কক্সবাজারে।

মুহিববুল্লাহ মুহিব/এমএসআর