জয়পুরহাটের ক্ষেতলালে যৌন হয়রানির ৮ দিন পর লজ্জায় এক স্কুলছাত্রী আত্মহত্যা করেছে। বৃহস্পতিবার (১৮ নভেম্বর) বিকেলে উপজেলার বড়তারা গ্রামে নিজ বাড়িতে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে সে। ওই স্কুলছাত্রী স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণিতে পড়ত।

পরিবারের অভিযোগ, যৌন হয়রানির ঘটনা সহ্য করতে না পেরে লজ্জা ও কষ্টে সে আত্মহত্যা করেছে। এর আগে গত ৮ নভেম্বর মেয়েটির বাবা বাদী হয়ে স্থানীয় রফিকুল ইসলাম (৪০) ও শাহিনুর ইসলামকে (৪০) আসামি করে ক্ষেতলাল থানায় মামলা দায়ের করেছেন। রফিকুল উপজেলার বাঘাপাড়া ও শাহিনুর বড়তারা গ্রামের বাসিন্দা।

নিহত স্কুলছাত্রীর (১৬) বাড়ি একই উপজেলার বাঘাপাড়া গ্রামে। তবে মেয়েটি বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ছিল বলে স্থানীয়রা জানিয়েছে।

মামলার এজাহার ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ক্ষেতলাল উপজেলার বাঘাপাড়া গ্রামের রফিকুল ইসলাম দীর্ঘদিন থেকে স্থানীয় মাধ্যমিক স্কুলের অষ্টম শ্রেণির বুদ্ধি প্রতিবন্ধী এক শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানি করে আসছিলেন। গত ৭ নভেম্বর স্কুলের এসএসসি শিক্ষার্থীদের বিদায় অনুষ্ঠানে অন্যদের সঙ্গে ওই ছাত্রীও উপস্থিত ছিল। অনুষ্ঠান শেষ করে বিকেলে বাড়ি ফেরার পথে তার সঙ্গে বড়তারা গ্রামের শাহিনুর রহমানের দেখা হয়। শাহিনুর তাকে বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে তার মোটরসাইকেলে তুলে নিয়ে বিভিন্ন পথ ঘুরে স্কুলের পরিত্যক্ত ঘরের সামনে নামিয়ে দেয়। তখন বিকেল সাড়ে ৫টা বাজে। 

এ সময় রফিকুল এসে ওই শিক্ষার্থীকে কৌশলে স্কুলের পরিত্যক্ত ঘরে নিয়ে যৌন নির্যাতন করে। তখন মেয়েটি কান্না শুরু করলে স্থানীয়রা এগিয়ে এলে রফিকুল পালিয়ে যায়। 

ওই ঘটনায় ৮ নভেম্বর দুপুরে মেয়েটির বাবা বাদী হয়ে রফিকুল ইসলাম ও শাহিনুর রহমানের নামে ক্ষেতলাল থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার পর আসামিরা পলাতক রয়েছে। এদিকে, বৃহস্পতিবার বিকেলে মেয়েটি ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে।

মেয়েটির বাবা ঢাকা পোস্টকে বলেন, যৌন হয়রানির ঘটনায় আমার মেয়ে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিল। এরমধ্যে প্রতিবেশীরা তাকে দেখলেই নানা কথা বলত। এসব মেনে নিতে না পেরে সে আত্মহত্যা করল।

এ বিষয়ে ক্ষেতলাল থানা পুলিশের ইন্সপেক্টর (তদন্ত) শাহ আলম ঢাকা পোস্টকে বলেন, যৌন হয়রানির ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। আত্মহত্যার ঘটনাটি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত চলছে। আসামিরা পলাতক আছে। তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। মেয়েটির মরদেহ উদ্ধার করা থানায় রাখা হয়েছে। আগামীকাল শুক্রবার (১৯ নভেম্বর) সকালে মরদেহ মর্গে পাঠানো হবে।

চম্পক কুমার/এমএএস