মেহেরপুরের গাংনীতে পাকা রাস্তা নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগে নির্মাণকাজ বন্ধ করে দিয়েছে এলাকাবাসী। বুধবার (১৭ নভেম্বর) দুপুরে অভিযোগের সত্যতা পেয়ে নিম্নমানের সামগ্রী অপসারণ করে নতুন করে কাজ শুরু করা হবে বলে জানিয়েছেন গাংনী উপজেলা প্রকৌশলী ফয়সাল হোসেন। 

উপজেলা প্রকৌশল অফিস সূত্রে জানা গেছে, প্রায় দুই কোটি টাকা ব্যয়ে উপজেলার গাড়াডোব-সাহারবাটি সড়কের ২৭শ মিটার রাস্তা পাকাকরণের কার্যাদেশ পায় চুয়াডাঙ্গার মেসার্স সাইফুল ইসলাম জোয়ার্দার নামে একটি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। কাজটি বাস্তবায়ন করছেন গাংনীর ঠিকাদার মজিরুল ইসলাম। রাস্তা নির্মাণের শুরুতে (সাবগ্রেড প্রস্তত হওয়ার পর) নিম্নমানের বালু ও ইটের খোয়া ব্যবহার করা হয়। নিম্নমানের ইট ও মাটিযুক্ত বালু ব্যবহারের কারণে এলাকাবাসীর তোপের মুখে পড়েন ঠিকাদার মজিরুল ইসলাম। একপর্যায়ে ৩ নম্বর ইট সরিয়ে নেওয়া হয়। পরে আবারো নিম্নমানের ইট ব্যবহার করলে এলাকাবাসী ফুঁসে ওঠে। পরে কাজ বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন করেন। 

সাহারবাটি গ্রামের ইদ্রিস আলী বলেন, রাস্তা নির্মাণের শুরুতে নিম্নমানের ইট, বালু ও খোয়া ব্যবহার করা হয়েছে। এতে কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় এলাকাবাসী প্রতিবাদ জানিয়েছে। 

স্থানীয় বাসিন্দা শ্যামল জানান, ২/৩ নম্বর ইট ও মাটিযুক্ত বালু দিয়ে কাজ চলছিল। কাজের প্রথম দিকে কিছু ২ নম্বর ইট ফেরত নিলেও আবারো নিম্নমানের ইট বালু দিয়ে কাজ শুরু করেছে। এসব নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে রাস্তা নির্মাণ করা হলে রাস্তা টেকসই হবে না।

সাহারবাটি গ্রামের গাজিউর রহমান জানান, গাংনী উপজেলা প্রকৌশল বিভাগ যথাযথ তদারকি না করার কারণে ঠিকাদার নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করছেন। নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করার কারণে এলাকার মানুষ বাধ্য হয়েই প্রতিবাদ করেছে। 

কাজ বাস্তবায়নকারী ঠিকাদার মজিরুল ইসলাম বলেন, রাস্তাটি এর আগে নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে করা ছিল। পরে ৪৫ লাখ টাকায় স্যালভেজ ক্রয় করতে হয়েছে। নিয়মানুযায়ী আগের সব সামগ্রী ব্যাবহার করার নিয়ম রয়েছে। আগেই কাজের মান খারাপ হওয়ায় এখন আমার ওপর দোষ আসছে। কিন্তু কেউ বুঝছে না আগের সামগ্রী আমি ফেলব কোথায়? স্থানীয়রা না বুঝে অভিযোগ করছেন। 

গাংনী উপজেলা প্রকৌশলী ফয়সাল হোসেন বলেন, নিম্নমানের ইট বালু দিয়ে রাস্তা নির্মাণ করা হচ্ছে- এমন অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে এর সত্যতা পাওয়া গেছে। এ কারনে কাজ বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে নিম্নমানের মালামাল অপসরাণের জন্য চিঠি দেওয়া হয়েছে। তার মালামল জেলা অফিসে টেস্টের জন্য পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট হাতে না আসা পর্যন্ত কাজ বন্ধ থাকবে। 

তিনি আরও বলেন, রাস্তাটি তদারকির দায়িত্বে থাকা উপসহকারী প্রকৌশলী আলাউদ্দীন অসুস্থ থাকার কারণে ঠিকাদারের নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের বিষয়ে খোঁজ নিতে পারেননি। 

মেহেরপুর জেলা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আসাদুজ্জামান বলেন, বিষয়টি এখন পর্যন্ত কেউ জানায়নি। খোঁজখবর নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে কোনোভাবেই নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করতে দেয়া হবে না।

আকতারুজ্জামান/আরএআর