যশোর শহরের রেলগেট এলাকায় পড়ে থাকা অজ্ঞাত পরিচয়ের এক অসুস্থ বৃদ্ধের (৭০) পাশে দাঁড়িয়েছেন বাংলাদেশ পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতির (পুনাক) সভানেত্রী জীশান মীর্জা। সোমবার (২২ নভেম্বর) রাতে গণ্যমাধ্যমে বিষয়টি জানতে পেরে তিনি ওই বৃদ্ধের চিকিৎসার দায়িত্ব নেন। 

এর আগে যশোর শহরের রেলগেট এলাকায় পাঁচ দিন ধরে সড়কের পাশে ফুটপাতে পড়ে থাকা অজ্ঞাত পরিচয়ের অসুস্থ বৃদ্ধের খবর গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। এরপর রোববার দিবাগত রাতে র‌্যাব সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। একইসঙ্গে র‌্যাব তার চিকিৎসা ও স্বজনদের খুঁজে বের করার প্রতিশ্রুতি দেয়।

যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক সার্কেল) বেলাল হোসাইন জানান, অসহায় বৃদ্ধের এমন অবস্থার কথা জানতে পেরে মহাপুলিশ পরিদর্শকের স্ত্রী ও পুনাক সভানেত্রী জীসান মির্জা যশোরের পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার জোয়ারদ্দার স্যারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। বৃদ্ধের চিকিৎসার যাবতীয় দায়িত্ব তিনি নেবেন বলে জানান।

এরপর সোমবার রাতেই পুলিশ সুপারের নির্দেশে আমি পুলিশের একটি দল নিয়ে সেই বৃদ্ধের কাছে বিভিন্ন খাবার ও ওষুধ নিয়ে হাজির হই। একইসঙ্গে পুনাক সভানেত্রীর নির্দেশনা মতো বৃদ্ধকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা পাঠানোর ব্যবস্থা করি।

এর আগে পাঁচ দিন ধরে অজ্ঞাত পরিচয়ের ওই বৃদ্ধ যশোর শহরের রেলস্টেশনের পাশের সড়কের ফুটপাতে পড়েছিলেন। রেলগেট স্ট্যান্ডের প্রাইভেটকার চালক রবিউল ইসলাম জানান, বৃহস্পতিবার (১৮ নভেম্বর) সকালে এসে দেখি, সড়কের পাশে ফুটপাতে এক বৃদ্ধকে শুইয়ে রাখা হয়েছে। তারা কথা বলতে চেষ্টা করলেও বৃদ্ধ কিছুই বলতে পারছেন না। তারা সামান্য খাবার কিনে দিলে সেগুলো কোনোমতো খেতে পারেন। বৃদ্ধের নাম-ঠিকানাও তারা উদ্ধার করতে পারেননি। শরীরে পচন ধরেছে। মল-মূত্র ত্যাগ করে গায়ে মাখিয়ে ফেলেছেন। 

এই অবস্থায় বৃদ্ধকে বাঁচাতে রোববার দুপুরে ৯৯৯ নম্বরে ফোন করেন আরেক প্রাইভেটকার চালক সাজু হোসেন। এরপর ঘটনাস্থলে যান যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) রফিকুল ইসলাম। কিন্তু তিনি সেখানে গিয়ে আশপাশে থাকা লোকজনদের বলে আসেন, এখানে পুলিশের কিছু করার নেই। পরে বৃদ্ধকে নিয়ে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হলে র‌্যাব-৬ যশোরের সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। 

এদিকে যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালের একটি সূত্র জানিয়েছে, এক সপ্তাহ আগে অজ্ঞাত পরিচয় ওই বৃদ্ধকে শার্শা এলাকা থেকে অ্যাম্বুলেন্সে করে যশোর হাসপাতালে এনে ভর্তি করা হয়েছিল। সে সময় সার্জারি ওয়ার্ডে রেখে তাকে চিকিৎসা দেওয়া হয়। এরপর বৃহস্পতিবার তাকে হাসপাতাল থেকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। কোনো স্বজন পাওয়া যায়নি বিধায় হাসপাতালেরই কেউ তাকে স্টেশনের পাশে ফেলে রেখে এসেছে এমন তথ্যই মিলেছে হাসপাতাল সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে।

জাহিদ হাসান/এসপি