চাঁদাবাজি এবং হামলার প্রতিবাদে চার দিন ধরে ঢাকা-রাঙ্গাবালী নৌরুটে যাত্রীবাহী লঞ্চ চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে বিপাকে পড়েছে ঢাকাগামী কয়েক হাজার মানুষ।

জানা যায়, শুক্রবার বিকেলে দশমিনা উপজেলার আউলিয়াপুর লঞ্চঘাটে ঢাকাগামী ডাবল ডেকার যাত্রীবাহী লঞ্চ এমভি জাহিদ-৩ এর কর্মচারীদের মারধর এবং লঞ্চ ভাঙচুর করে নগদ চার লাখ টাকা ছিনিয়ে নেয় দশমিনা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট ইকবাল মাহমুদ লিটন ও তার লোকজন। 

এ ঘটনায় শনিবার সকালে দশমিনা থানায় লঞ্চের ক্যাশিয়ার মো. ইউসুফ বাদী হয়ে চেয়ারম্যানসহ ১৬ জনকে আসামি করে মামলা করেন। মামলা দায়েরের পর পুলিশ এজাহারভুক্ত দুুইজনকে গ্রেফতার করে জেলহাজতে পাঠায়। তবে বাকি আসামিরা গ্রেফতার না হওয়ায় নিরাপত্তার অজুহাতে ঢাকা এবং রাঙ্গাবালী থেকে লঞ্চ চলাচল বন্ধ করে দেয় লঞ্চ মালিকরা।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ লিটন ১৭ নভেম্বর প্রথমবারের মতো এমভি জাহিদ লঞ্চের মালিক জাহিদ মেলকারকে চায়ের আমন্ত্রণ জানান। এরপর তার কাছে আউলিয়াপুর, বাঁশবাড়িয়া এবং হাজিরহাট লঞ্চঘাটে সুপারভাইজার নিয়োগের জন্য দাবি করেন।

তখন জাহিদ মেলকার জানান, এসব ঘাটে লঞ্চের সুপারভাইজার নিয়োগ করা রয়েছে। এতে লিটন ক্ষুব্ধ হয়ে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। তখন মালিক অস্বীকৃতি জানালে লঞ্চ দীর্ঘ সময় ঘাটে আটক করে রাখেন লিটন এবং তার অনুসারীরা। একপর্যায়ে যাত্রী ও লঞ্চ কর্তৃপক্ষের অনুরোধে লঞ্চ ছেড়ে দেওয়া হয়।

বৃহস্পতিবার বিকেলে লঞ্চটি আউলিয়াপুর লঞ্চঘাটে যাত্রী তুলতে নোঙর করলে আসামিরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে লঞ্চে ওঠে। এ সময় তারা ১০ জন কর্মচারীকে পিটিয়ে জখম করে। তারা লঞ্চের সিন্ধুক থেকে তিন লাখ ৬৫ হাজার ৬২০ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায়।

দশমিনা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও দশমিনা সদর ইউনিয়নের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান ইকবাল মাহামুদ লিটন বলেন, এটি আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। ঘটনাটি মিথ্যা এবং ভিত্তিহীন।

পটুয়াখালী-৩ (দশমিনা-গলাচিপা) আসনের সংসদ সদস্য এস এম শাহজাদা বলেন, আমি ইতোমধ্যে লঞ্চ কর্তৃপক্ষ এবং বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলেছি। এখনও আলোচনা চলছে। আশা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যে সমাধান হবে।

দশমিনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মেহেদী হাসান জানান, দুুইজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদেরও গ্রেফতারে পুলিশ চেষ্টা চালাচ্ছে। 

মহিব্বুল্লাহ্ চৌধুরী/এসপি