মুক্তিযোদ্ধার সন্তানের মিথ্যা তথ্যে নৌকা পেলেন আ.লীগ নেতা
লক্ষ্মীপুরে বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তানের মিথ্যা পরিচয়ে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী এমরান হোসেন নান্নু আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। নান্নু সদর উপজেলার হামছাদী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রার্থী ও বর্তমান চেয়ারম্যান।
মনোনয়ন বোর্ডে জমা দেওয়া চেয়ারম্যান প্রার্থীদের আওয়ামী লীগের তৃণমূলের তালিকায় বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে তার পরিচয় দেওয়া হয়।
বিজ্ঞাপন
তবে স্থানীয়রা জানিয়েছে, নান্নুর প্রয়াত বাবা আবদুর রশিদ মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন না। তিনি মিথ্যা তথ্য দিয়ে মঙ্গলবার (২৩ নভেম্বর) নৌকার মনোনয়ন পেয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (২৫ নভেম্বর) বিকেলে দলবল নিয়ে তিনি সদর উপজেলা পরিষদে রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। নান্নু ওই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি।
বিজ্ঞাপন
দলীয় ও স্থানীয় সূত্র জানা গেছে, ২৬ ডিসেম্বর চতুর্থ ধাপে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার ১৫টি ইউনিয়নে নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। এ লক্ষ্যে গত বৃহস্পতিবার জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ দায়িত্বশীল নেতারা সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থীদের তালিকা করে কেন্দ্রে জমা দিয়েছেন।
স্থানীয় সরকার নির্বাচন-২০২১ এর মনোনয়ন বোর্ডের কাছে পাঠানো উত্তর হামছাদীর সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থীদের তালিকা ঢাকা পোস্টের হাতে এসেছে। সেখানে প্রথমে এমরান হোসেনের নামের নিচে বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান লেখা। পদবির ছকে বর্তমান চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি উল্লেখ করা। এ ছাড়া ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি সলিমুল্লাহ পাটওয়ারী ও জেলা শ্রমিক লীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক মো. নজরুল ইসলামের নামও দেওয়া হয়।
প্রার্থী সলিমুল্লাহ পাটওয়ারী বলেন, সদর উপজেলা ও ইউনিয়নের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নামের তালিকা আমাদের কাছে আছে। এমরান হোসেনের প্রয়াত বাবা আবদুর রশিদের নাম কোনো তালিকা নেই। অতীতেও ছিল না। এটা পুরোপুরি প্রতারণা।
ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবির বাবুল মোল্লা বলেন, এমরান হোসেনের বাবা মুক্তিযোদ্ধা তো দূরের কথা, তিনি সহযোগীও ছিলেন না। তাকে নৌকা পাইয়ে দিতে মিথ্যা তথ্য লিখে প্রতারণা করা হয়েছে।
পশ্চিম হাসন্দি গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা রাজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী বলেন, এই এলাকার মুক্তিযোদ্ধাদের ব্যক্তিগতভাবে চিনি। এমরান হোসেনের বাবা কখনো মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন না। যুদ্ধ সংশ্লিষ্ট কোনো কাজেও তিনি সহায়তা করেনি।
গত ১৪ অক্টোবর লক্ষ্মীপুর প্রেসক্লাবে এমরান হোসেন নান্নুর দলীয় পদ অবৈধ দাবি করে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক এম এ কাদের সিদ্দিকী বলেন, নান্নুর ইউনিয়ন কমিটিতে কোনো পদ ছিল না।
এমরান হোসেন নান্নু দাবি করেন, তার বাবা মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। সনদও আছে। প্রতারণা করা হয়নি। একটি মহল তার বিরুদ্ধে এখন অপপ্রচার করছেন।
এ ব্যাপারে লক্ষ্মীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম ফারুক পিংকু বলেন, তালিকায় প্রার্থীর নাম-পদবি লেখা হয়েছে। বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান লেখা হয়নি। তালিকাটি প্রতিবেদকের কাছে আছে জানালে তিনি বলেন, তাহলে আমি তা খেয়াল করিনি।
হাসান মাহমুদ শাকিল/আরআই