উদয় চন্দ্র দাসের মা উমা রানী দাস

ছেলে উদয় চন্দ্র দাসের নির্যাতন সইতে না পেরে শনিবার (২৩ জানুয়ারি) নিজ বাড়িতে বিষপান করেন উমা রানী দাস। প্রতিবেশী লোকজন তাকে উদ্ধার করে জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে সোমবার (২৫ জানুয়ারি) রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান উমা রানী। পরদিন মঙ্গলবার থানা পুলিশ লাশের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে।

বুধবার (২৭ জানুয়ারি) হাসপাতালে লাশের ময়নাতদন্ত শেষে সন্ধ্যায় নিজ গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। সনাতন ধর্মানুসারে যখন লাশ সৎকারের প্রস্তুতি নেয় স্বজনরা। এ সময় বাধা দেয় ছেলে উদয় চন্দ্র দাসসহ তার লোকজন।

পরে থানায় অভিযোগ করলে পুলিশের সহায়তায় বৃহস্পতিবার (২৮ জানুয়ারি) সকালে লাশের শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। কিশোরগঞ্জ জেলার কুলিয়ারচর উপজেলার ছয়সূতী গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।

থানা পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, ছয়সূতী গ্রামের চন্দন কুমার দাসের স্ত্রী উমা রানী দাস ছেলে উদয় চন্দ্র দাসের নির্যাতন সইতে না পেরে ২৩ জানুয়ারি বিষপান করেন। পরে তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে ২৫ জানুয়ারি রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সেখানে মারা যান উমা রানী। পরদিন ২৬ জানুয়ারি বাজিতপুর থানা পুলিশ লাশের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে। ময়নাতদন্তের জন্য পুলিশ লাশ কিশোরগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করে।

২৭ জানুয়ারি লাশের ময়নাতদন্ত শেষে সন্ধ্যায় নিজ গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আসে স্বজনরা। সনাতন ধর্মানুসারে যখন লাশ সৎকারের প্রস্তুতি নেয় তারা। এ সময় বাধা দেয় ছেলে উদয়সহ তার লোকজন।

উমা রানীর মৃত্যুর ঘটনায় থানায় বা আদালতে মামলা না করার শর্তে বন্ড সই দিলে লাশের সৎকার করতে পারবে বলে দাবি করেন ছেলে উদয়। বন্ড সই না করলে লাশ সৎকার করতে দেওয়া হবে না বলেও জানায় সে।

এ ঘটনায় মৃতের অপর ছেলে সৌরভ দাস এবং তার বাবা কুলিয়ারচর থানা পুলিশকে জানিয়ে সহায়তা চায়। খবর পেয়ে পুলিশ আসলে পালিয়ে যায় উদয় দাস ও তার লোকজন। পরে নিহতের স্বামী চন্দন কুমার দাস থানায় অপমৃত্যু মামলা দায়ের করেন।

তার ছেলে উদয়ের অত্যাচার নির্যাতন সইতে না পেরে তার স্ত্রী আত্মহত্যা করেছেন বলে জানান স্বামী চন্দন কুমার দাস।

উদয় চন্দ্র দাস অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, তার মা তার ভাইকে সমস্ত সম্পত্তি লিখে দিয়েছেন। তার বাসায় গিয়ে মা অপমানিত হয়ে বাড়ি এসে আত্মহত্যা করেছেন।

কুলিয়ারচর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একেএম সুলতান মাহমুদ বলেন, লাশ সৎকারে বাধার বিষয়টি তিনি জানেন না। নিহতের স্বামী ও ছেলেকে রাতে বাড়ি থেকে থানায় এনে স্বামীকে মামলার বাদী করে কুলিয়ারচর থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা করা হয়।

এসকে রাসেল/এমএসআর