রক্ত দিয়ে খালেদা জিয়ার ঋণ পরিশোধে মাঠে থাকব বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও খুলনা মহানগর সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু। 

সোমবার (২৯ নভেম্বর) দুপুরে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি ও বিদেশে সুচিকিৎসার দাবিতে কেন্দ্রীয় কর্মসুচির অংশ হিসেবে খুলনা বিভাগীয় সমাবেশ সফলের লক্ষ্যে খুলনা মহানগর ও জেলা বিএনপি আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। 

সংবাদ সম্মেলনের আগে বেলা সাড়ে ১১টায় সমাবেশ সফল করতে খুলনা মহানগর ও জেলা বিএনপির যৌথ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সংবাদ সম্মেলনে মঞ্জু বলেন, বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে সু-চিকিৎসার দাবিতে মঙ্গলবার (৩০ নভেম্বর) বিকেলে খুলনায় বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। প্রশাসনের কাছে দুটি স্থানের অনুমতি চাওয়া হয়েছে। একটি খুলনার শহীদ হাদিস পার্ক এবং অপরটি নগরীর কেডি ঘোষ রোড। আশা করি প্রশাসন আজকের মধ্যে অনুমতি দেবে। এই কর্মসূচি অনুমতি সাপেক্ষে বিনা বাধায় করতে চাই। সমাবেশে কোনো ধরনের বাধা আসলে পরিনাম শুভ হবে না। 

তিনি বলেন, সরকার রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে বেগম খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করছে না। দেশনেত্রীর মুক্তি ও উন্নত চিকিৎসার দাবিতে এবং নেত্রীর ঋণ শোধ করতে খুলনা বিএনপির নেতাকর্মীরা প্রয়োজনে জীবন দিতে প্রস্তুত আছে। মঙ্গলবারের সমাবেশ হবে স্মরণকালের বড় সমাবেশ। এ সমাবেশ সফল করতে বিএনপির নেতাকর্মীরা কাফনের কাপড় বেঁধে মাঠে থাকবে।

তিনি আরও বলেন, মঙ্গলবারের সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক মন্ত্রী গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। বিশেষ অতিথি থাকবেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট নিতাই চন্দ্র রায় ও বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মুজিবর রহমান সরোয়ার।

সমাবেশের অনুমতি চেয়ে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ ও খুলনা সিটি করপোরেশনের কাছে আবেদন করা হয়েছে। সকল বাধা বিপত্তি উপেক্ষা করে হাদিস পার্ক অথবা কেডি ঘোষ রোডে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। নির্ধারিত সময় বেলা ১১টার পরিবর্তে বিকাল ৩টায় অনুষ্ঠিত হবে। প্রিয় নেত্রীর চিকিৎসার দাবিতে মানবিক কর্মসূচিতে কেএমপি ও সিটি করপোরেশন অনুমতি প্রদান করবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। 

গত ২২ নভেম্বরের সমাবেশে পুলিশের হামলায় প্রায় দুই শতাধিক কর্মি আহত হয়েছেন জানিয়ে সাবেক সাংসদ মঞ্জু বলেন, প্রথম ঘোষণায় ৭১ জন আহত হওয়ার কথা জানা গেলেও ওয়ার্ড পর্যায়ে আহতদের দেখতে যেয়ে আমরা হতবাক হয়েছি। আহতদের সংখ্যা অনেক বেশি ও নৃশংসতার বিভৎসরূপ অনেক বড়। কারাগারে আটক ৭জন এখনও মুক্ত হয়নি। 

সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, দেশনেত্রীর মুক্তি ও বিদেশে সুচিকিৎসার আন্দোলন এখন জাতীয় দাবিতে পরিণত হয়েছে। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে চাইলে, বিদেশে সুচিকিৎসার জন্য পাঠাতে চাইলে একমাত্র পথ জনগণকে সঙ্গে নিয়ে রাজপথে নামতে হবে। রাজপথে নামা ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। এখন আর বসে থাকলে চলবে না উল্লেখ করে খুলনাবাসীকে সমাবেশে উপস্থিত হওয়ার আহবান জানান।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে বলেন, আপনি নির্দয় হবে না। মানবিক কারণে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে থাকা বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়ে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করুন।

মহানগর ও জেলা বিএনপির যৌথ সভা ও যৌথ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন খুলনা জেলা সভাপতি অ্যাডভোকেট শফিকুল আলম মনা ও জেলা সাধারণ সম্পাদক আমির এজাজ খান, মীর কায়সেদ আলী, শেখ মোশাররফ হোসেন, অ্যাডভোকেট ফজলে হালিম লিটন, রেহেনা ঈসা, শাহজালাল বাবলু, অধ্যক্ষ তারিকুল ইসলাম, শেখ আব্দুর রশিদ, এস এ রহমান বাবলু, মোল্লা সাইফুর রহমান মিন্টু, আব্দুর রকিব মল্লিক, অ্যাডভোকেট তসলিমা খাতুন ছন্দা, আবু হোসেন বাবু, মো. মাহবুব কায়সার, নজরুল ইসলাম বাবু, কামরুজ্জামান টুকু, মোল্লা মোশারফ হোসেন মফিজ, আসাদুজ্জামান মুরাদ, শামসুল আলম পিন্টু। 

এ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন- মেহেদী হাসান দিপু, মহিবুজ্জামান কচি, মজিবর রহমান ফয়েজ, মুর্শিদুর রহমান লিটন, ওয়াহিদুর রহমান রানা, ইকবাল হোসেন খোকন, নিজাম উর রহমান লালু, ইউসুফ হারুন মজনু, সাজ্জাদ আহসান পরাগ, রবিউল হোসেন, সেলিম সরদার, হাসানুর রশিদ মিরাজ, মিজানুর রহমান মিলটন, শামসুজ্জামান, কাজী শফিকুল ইসলাম, নাজমুল হুদা চৌধুরী, শেখ আবুল বাশার, খন্দকার ফারুক হোসেন, শেখ সরোয়ার হোসেন, জাফরী নেওয়াজ চন্দন, নিয়াজ আহমেদ তুহিন, আবু সাঈদ শেখ, কাজী মিজানুর রহমান প্রমূখ। 


মোহাম্মদ মিলন/আরআই