খালাতো বোন আমোদা বেগম গত রোববার (২৮ নভেম্বর) ইউপি নির্বাচনে সদস্য পদে বিজয়ী হয়েছেন। আজ মঙ্গলবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে নানাবাড়ি এসে বোনের বিজয় উপলক্ষে আনন্দ আয়োজনে শামিল হওয়ার কথা ছিল দুর্জয়ের (১৭)। কিন্তু আনন্দের বদলে স্বজনদের জন্য বিষাদের পাহাড় নিয়ে গ্রামে ফিরছে দুর্জয়। স্বজনরা এখন তার নিথর দেহের জন্য অপেক্ষা করছেন।

গতকাল সোমবার (২৯ নভেম্বর) ঢাকার রামপুরায় বাসচাপায় নিহত দুর্জয় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার পানিশ্বর গ্রামের আব্দুর রহমানের ছেলে। প্রায় ২০ বছর আগে দুর্জয়ের বাবা সবকিছু বিক্রি করে ঢাকায় চলে যান। সেজন্য দুর্জয়ের মরদেহ সরাইল উপজেলা সদরের হালুয়াপাড়ায় তার নানাবাড়ির পাশের একটি কবরস্থানে দাফন করা হবে।

তিন ভাই-বোনের মধ্যে দুর্জয় ছিল সবার বড়। তার বাবা আব্দুর রহমান চা দোকানি। আর ভাই মনির হোসেন ভাড়ায় গাড়ি চালান।

মঙ্গলবার বিকেল ৩টার দিকে দুর্জয়ের মরদেহ নিয়ে সরাইলের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন তার স্বজনরা। মরদেহ এসে পৌঁছার পর বাদ এশা জানাজা হওয়ার কথা রয়েছে।

দুর্জয়ের মৃত্যুতে তার নানাবাড়িতে সোমবার রাত থেকে চলছে শোকের মাতম। একমাত্র দেবরের জন্য কান্নায় ভেঙে পড়েছেন ভাবি শারমিন আক্তার। আর খালা আফিয়া বেগমও মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন। মরদেহের অপেক্ষায় বাড়ির সামনের সড়কে অবস্থান করছেন দুর্জয়ের স্বজনরা। দুর্জয়ের মরদেহ দেখতে এক এক করে জড়ো হচ্ছেন আত্মীয়-স্বজনরা।

দুর্জয়ের বড়খালা আফিয়া বেগম জানান, ওর খালাতো বোন আমোদা নির্বাচনে জয়ী হয়েছে। পরীক্ষা শেষে বোনের বিজয়ে আনন্দ করতে আজ নানাবাড়ি আসার কথা ছিল তার। কিন্তু সব আনন্দ মাটি হয়ে গেছে।

দুর্জয়ের ভাবি শিরিন আক্তার বলেন, আমার ছোট্ট বাচ্চাটাকে নিয়ে সারাক্ষণ মেতে থাকত দুর্জয়। আর কেউ আমার বাচ্চার সঙ্গে খেলবে না। আমাকে ডাকাডাকি করবে না। এসব ভাবতেই আমার বুক ফেটে যাচ্ছে।

উল্লেখ্য, গতকাল সোমবার (২৯ নভেম্বর) রাত পৌনে ১১টার দিকে ঢাকার রামপুরা এলাকায় গ্রিন অনাবিল পরিবহনের বাসের চাপায় শিক্ষার্থী দুর্জয় নিহত হয়। সে রামপুরার একরামুননেসা স্কুল থেকে এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছিল।

আজিজুল সঞ্চয়/আরএআর/জেএস