বেশি জমি দখলে নেওয়ায় বিদ্যালয়ে বসবাস দাতার
বড্ডা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জন্য সাড়ে ছয় শতাংশ জমি রেজিস্ট্রি করে দিয়েছিলেন মোহাম্মদ আলী নামের এক ব্যক্তি। কিন্তু তার অনুপস্থিতিতে ১০ শতাংশ জমি নিয়ে বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণ করে কর্তৃপক্ষ।
বিষয়টি জানার পর অতিরিক্ত দখলকৃত সাড়ে তিন শতাংশ জমি ফিরে পেতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ দেন জমিদাতা। কিন্তু এতে কোনো কাজ হয়নি। এখন পর্যন্ত জমি ফিরে পাননি তিনি।
বিজ্ঞাপন
এ অবস্থায় গত কয়েক মাস ধরে বিদ্যালয়ে অবস্থান নিয়েছেন মোহাম্মদ আলী। বিদ্যালয়ের মূল দরজায় তালা ঝুলিয়ে দিয়ে ভেতরে বসবাস করে আসছেন এই জমিদাতা।
নেত্রকোনার মদন উপজেলার গোবিন্দশ্রী ইউনিয়নের বড্ডা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ঘটনা এটি। এ ঘটনায় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জিয়াউল হক বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিলেও জমিদাতাকে বিদ্যালয় থেকে সরাতে পারছেন না।
বিজ্ঞাপন
বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, অভিযোগ করেও জমি ফিরে না পেয়ে বিদ্যালয়ের মূল দরজায় তালা ঝুলিয়ে দেন উপজেলার বড্ডা গ্রামের বাসিন্দা মোহাম্মদ আলী। তালা ঝুলানোর পর থেকে তিনি দীর্ঘদিন বিদ্যালয় ভবনের ভেতরে বসবাস করছেন। বৃহস্পতিবার (২৮ জানুয়ারি) বিকেলেও তাকে বিদ্যালয়ে দেখা গেছে।
জমিদাতা মোহাম্মদ আলী বলেন, আমি বিদ্যালয়ের নামে সাড়ে ছয় শতাংশ জমি লিখে দিয়েছিলাম। আমার অনুপস্থিতিতে এই স্থানে ১০ শতাংশ জায়গা নিয়ে ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। নির্ধারিত জমির চেয়ে সাড়ে তিন শতাংশ বেশি জায়গা নিয়ে গেছে তারা। এজন্য আমি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে ২০১৫ সালে লিখিত অভিযোগ দিয়েছিলাম। কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। অতিরিক্ত জায়গায় ভবন নির্মাণ করার প্রতিবাদ করেও কোনো বিচার পাইনি। তাই আমি তালা ঝুলিয়ে দিয়েছি। বিষয়টি সুরাহা না হওয়া পর্যন্ত আমি বিদ্যালয় ছাড়ব না।
বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি এনায়েত কবির বলেন, এ নিয়ে আমি কয়েকবার জমিদাতার সঙ্গে বসেছিলাম। কিন্তু কোনো সুরাহা হয়নি। তিনি তার জমি ফিরে না পাওয়া পর্যন্ত বিদ্যালয় ছাড়বেন না বলেছেন।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জিয়াউল হক বলেন, ১৯৯৬ সালে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করা হয়। ২০১৩ সালে ভবন নির্মাণ করা হয়। ভবন নির্মাণের সময় জমিদাতার অনুমতি নিয়েই করা হয়েছে। কিন্তু জমিদাতা মোহাম্মদ আলী হঠাৎ করে বিদ্যালয় ভবনের মূল দরজায় তালা ঝুলিয়ে কয়েক মাস ধরে বিদ্যালয়ে বসবাস করছেন। বহুবার বলেও কোনো লাভ হয়নি। তাই আমি বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।
মদন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল হোসেন বলেন, এ ঘটনায় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান জমিদাতার সঙ্গে কথা বলেছেন। কিন্তু তিনি মানছেন না। আমি ইউএনওকে বিষয়টি জানিয়েছি।
মদন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বুলবুল আহমেদ বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার সঙ্গে আলোচনা করে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।
এএম