ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার লোহাগাড়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির এক ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত ও ব্ল্যাকমেইল করে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে বখাটে মিরাজ হাসানকে গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছে স্কুল শিক্ষার্থীরা।

মঙ্গলবার (৩০ নভেম্বর) দুপুরে পীরগঞ্জ-ঠাকুরগাঁও সড়কের লোহাগাড়া বাজার এলাকায় এই মানববন্ধন পালন করা হয়।

নুসরাত জাহান পায়েলের বান্ধবী অদ্রীতা বলেন, আমার বান্ধবী আত্মহত্যা করেছে। অবশ্যই এর পেছনে কারণ রয়েছে। যার প্ররোচনায় নুসরাত আত্নহত্যা করেছে, প্রসাশনের কাছে তার বিচার দাবি করছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে সেই প্ররোচকের ফাঁসি দাবি করছি৷ 

আরেক বান্ধবী বলেন, আর কত পায়েল এভাবে ঝরে যাবে? আমরা এর সুষ্ঠ বিচার চাই। আর কোনো পায়েল যাতে অকালে না ঝরে যায়। আমরা এই প্ররোচক মিরাজের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করছি৷ 

পায়েলের চাচাতো বোন বৃষ্টি বলেন, আমার বোন আত্মহত্যা করার ৫/৬ দিন পার হয়ে গেল। কার প্ররোচনায় আত্মহত্যা করেছে, তা সে চিঠিতে বলেছে। কিন্তু এখনও তাকে গ্রেফতার করা হয়নি। আমরা সেই প্ররোচকের বিচার চাই। 

পায়েলের বান্ধবী বর্ষা আক্তার বলেন, প্রায়ই নুসরাত জাহান পায়েলকে উত্ত্যক্ত ও মারপিট করতো। ব্ল্যাকমেইল করে আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও ইনটারনেটে ছেড়ে দেওয়ার হুমকি দিত। ওই বখাটেকে অবিলম্বে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর দাবি জানাচ্ছি। 

পায়েলের বাবা নূর ইসলাম বলেন, আমার মেয়েকে প্রায়ই সে বিরক্ত করত। আমি কয়েকবার তাকে নিষেধ করি এবং তার বাবাকেও বিষয়টি জানাই। কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। সে আমার মেয়েকে মারত এবং নানা ভাবে মানসিক নির্যাতন করত। এ ব্যাপারে স্থানীয়ভাবে সালিশ-মীমাংসা হওয়ার পরও মিরাজ থেমে থাকেনি। 

তিনি আরও বলেন, আমার মেয়ে আত্মহত্যা করার আগের দিন চিঠিতে লিখেছে যে মিরাজ তাকে নির্যাতন ও মারধর করত। সে সব ঘটনাগুলো চিঠিতে লিখে রেখেছে। মেয়েকে আমি কোনো দিন নাম ধরে ডাকিনি, মা বলে ডাকতাম। আর বখাটে মিরাজ আমার বুক খালি করল। তার প্ররোচনা, ভয়ভীতি ও ব্ল্যাকমেইলের জন্য আমার মেয়ে আত্নহত্যা করেছে। আমি চাই মিরাজকে অবিলম্বে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হোক।
 
প্রসঙ্গত, গত ২০ নভেম্বর লোহাগাড়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী নুসরাত জাহান পায়েল বখাটে মিরাজের অপমান সহ্য করতে না পেরে গলায় ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করে। 

এম এ সামাদ/আরআই