বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলায় সড়ক দুর্ঘটনায় সাংবাদিক শফিউল আলম বিপুল নিহতের সাড়ে পাঁচ বছর পর কবর থেকে তার মরদেহ উত্তোলন করা হয়েছে। মঙ্গলবার (৭ ডিসেম্বর) দুপুরে বগুড়া জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রুপম দাস ও পুলিশের উপস্থিতিতে উপজেলার ভাটগ্রাম ইউনিয়নের বর্ষণ গ্রাম থেকে মরদেহটি উত্তোলন করা হয়। 

জানা গেছে, বর্ষণ গ্রামের মোকছেদ আলীর ছেলে সাংবাদিক বিপুল নিহতের পাঁচ বছর পর পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ এনে বগুড়ার আদালতে ২০২০ সালের ৬ ডিসেম্বর মামলা দায়ের করেন বিপুলের ছোট ভাই রফিকুল ইসলাম। আদালতের আদেশে গত ২৯ সেপ্টেম্বর মামলাটি থানায় রেকর্ড করা হয়েছে। সাংবাদিক বিপুলের ঘনিষ্ঠ সহকর্মী সাংবাদিক আমিনুল ইসলাম জুয়েল মামলার প্রধান আসামি। আমিনুল ইসলাম জুয়েল একই এলাকার মোজাম্মেল হকের ছেলে। অন্য আসামিরা হলেন- মান্নান, মোজাম্মেল, মজিদ, মানিক, খোকন, সাইদুল ও আবু সাইদ। 

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ২০১৬ সালের ১৮ জুন সন্ধ্যায় ভাটগ্রাম ইউনিয়নের বর্ষণ গ্রামের নিজ বাড়িতে ফেরার পথে কালিশ-বীজরুল রাস্তার পুনাইল সীমানায় গাছের সঙ্গে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হন সাংবাদিক বিপুল। পথচারীরা আহত বিপুলকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। সেখানে অবস্থার অবনতি ঘটলে তাকে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক বিপুলকে মৃত ঘোষণা করেন। সড়ক দুর্ঘটনায় সাংবাদিক বিপুল নিহতের সংবাদ জাতীয় ও স্থানীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। বিপুল দৈনিক ইত্তেফাকের সংবাদদাতা ছিলেন। সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে উল্লেখ করে তার মৃত্যু সনদ নিবন্ধন করেছে ভাটগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদ। 

মামলার বিবরণ জানা গেছে, ঘটনার দিন বিকেলে কৌশলে বিপুলের মোটরসাইকেলে ওঠেন প্রধান আসামি জুয়েল। নন্দীগ্রাম আসার পথে বরিন্দা পাগরাপাড়া এলাকায় বিপুলকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। মামলার তদন্তভার গ্রহণ করেছেন থানার এসআই শাহ সুলতান হুমায়ুন। 

এ বিষয়ে নিহত সাংবাদিক বিপুলের ছোট ভাই কামরুল হাসান বলেন, কিছু সমস্যার কারণে মামলা করতে দেরি হয়েছে।

নন্দীগ্রাম থানার তৎকালীন ওসি ও বর্তমানে সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার মো. হাসান শামীম ইকবাল বলেন, সাংবাদিক বিপুলের সঙ্গে আমার ভালো সম্পর্ক ছিল। সে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছে। থানায় জিডি করা হয়েছিল। 

এ বিষয়ে নন্দীগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ জানান, সাংবাদিক নিহতের বিষয়ে থানায় সেই সময় ইউডি মামলা হয়নি। সত্য-মিথ্যা মামলার তদন্তে বেরিয়ে আসবে। 

আরএআর