‘দাওয়াত রইলো, আসবেন কিন্তু অবশ্যই’ নামে একটি ব্যানার ঝুলছে। নিচে বসে বিভিন্ন ধরনের ভাপা পিঠা তৈরি করছেন এক ব্যক্তি। তাকে চারপাশ থেকে ঘিরে রেখেছে পিঠাপ্রেমীরা। এ চিত্র নরসিংদী সদর উপজেলার ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পাশে ভেলানগর এলাকায়।

ওই পিঠা বিক্রেতার নাম মালেক মিয়া (৫৫)। তার বাড়ি নরসিংদী সদর উপজেলার তরোয়া এলাকায়। ১০ বছর ধরে তিনি পিঠা বিক্রি করছেন এই জায়গায়। প্রতিদিন বিক্রি হয় প্রায় ১০-১৫ হাজার টাকার মতো। তবে মালেক মিয়ার চ্যালেঞ্জ ‘এ রকম পিঠা কেউ খাওয়াতে পারলে ১০ হাজার টাকা পুরস্কার’ দেওয়া হবে। 

সরেজমিনে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দেখা যায়, অন্ধকার যত বাড়ছে, মালেক মিয়ার দুই জোড়া চুলায় বসানো বিশেষ পাতিলের ভাঁপ ততই বাড়ছে। সেইসঙ্গে বাড়ছে পিঠাপ্রিয় মানুষের ভিড়। মালেক মামার দোকানের হরেক রকম পিঠা ও দামের বিশেষত্বের কারণে এখানে প্রতি বছরই এমন ভিড় হয়। সন্ধ্যার পর থেকে বেচাকেনা চলে রাত ৯টা পর্যন্ত। বৈশিষ্ট্য অনুসারে ২০ টাকা থেকে শুরু করে পিঠার দাম হয় ১০০০ টাকা পর্যন্ত।

নাসির হোসাইন নামে একজন এসেছেন গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার বর্মী এলাকা থেকে। তিনি বলেন, ইউটিউব এবং ফেসবুকে দেখে আমি এই পিঠা সম্পর্কে জানতে পেরেছি । তারপর আজ এখানে আসি বন্ধুদের নিয়ে। সব মিয়ে ভালো লাগছে আমার।

সেলিম নামে এক ক্রেতা বলেন, আমি মাধবদী থেকে এসেছি। এখানে পিঠার ভিন্নতা আছে। স্বাদ আলাদা এবং পরিচ্ছন্ন অনেক।  তাছাড়া বিভিন্ন মানুষের সমাগম হয়। সেটা দেখতেও ভাল্লাগে। আমি আজ ২০০ টাকা দামের দুইটা পিঠা কিনেছি পরিবারের জন্য।

রাব্বি মিয়া নামে একজন বলেন, আমি এসেছি পাশের জেলা গাজীপুর থেকে। বন্ধুদের মুখে শুনেই এখানে এসেছি। পিঠার দাম ভিন্ন ভিন্ন। সব মিলে ভালো লাগছে। তাছাড়া শীতের শুরু এবং সন্ধ্যার আড্ডা উপভোগ করি।

পিঠা বিক্রেতা মালেক মিয়া বলেন, আমার এখানে কিশোরগঞ্জ, ভৈরব, গাজীপুর থেকে লোক আসে পিঠা খেতে। আগে হরেক রকমের পিঠা বিক্রি করতাম না। তিন বছর ধরে বিভিন্ন রকমের পিঠা বিক্রি করি। ২০ টাকা থেকে শুরু করে ১০০০ টাকাও পিঠা আছে এখানে।

পিঠার সঙ্গে বিশেষ উপাদান আর কি কি দেন এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, চালের গুড়া, গুড় ও নারিকেলের পাশাপাশি  মালাই, সুগন্ধি চাল, কিশমিশ, খেঁজুর, পেস্তাবাদাম, কাঠবাদাম, কাজুবাদাম ইত্যাদি উপাদান যুক্ত করি। এই রকম পিঠা কেউ খাওয়াতে পারলে ১০ হাজার টাকা পুরস্কার দেব।

এসপি