গ্রেফতার নয়জনের মধ্যে ৫ জন

পাবনা সদর উপজেলার ভাঁড়ারা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নৌকা ও ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে গোলাগুলিতে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী ইয়াসিন আলম নিহত হওয়ার ঘটনায় বিদেশি অস্ত্র, গুলিসহ মোট ৯ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শনিবার (১৮ ডিসেম্বর) দুপুরে সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

গ্রেফতাররা হলেন, নলদহ গ্রামের বকুল খানের ছেলে মুন্নাফ খান (৩০), নলদহ বাজারের দিরাজ সরদারের ছেলে নজরুল সরদার (৩৩), মহাদেবপুর পূর্বপাড়া গ্রামের খবির শেখের ছেলে রবিউল ইসলাম রবি (৪০), কোলাদি বিজয়রামপুর গ্রামের নাদের বিশ্বাসের ছেলে শহিদুল ইসলাম (৩০), মহাদেবপুর পূর্বপাড়া গ্রামের তাহেজ উদ্দিনের ছেলে সিরাজ শেখ (৩৬)।

এছাড়া বর্তমান চেয়ারম্যান আবু সাঈদ খানের পালকপুত্র শাহরিয়ার (৩৩), দক্ষিণ রাঘবপুর অনন্ত বাজার এলাকার মৃত আব্দুল জলিলের ছেলে আব্দুল আলিম (৪৮), দোগাছি ইউনিয়নের পিপড়া গ্রামের মানিক হোসেন (৩৮), দোগাছি ইউনিয়নের নৌকার চেয়ারম্যান প্রার্থী আলতাব মাহমুদ খানের ছেলে শুভ (২৮) গ্রেফতার হন।

তাদের ভাঁড়ারা ইউনিয়নের নলদহবাজার ও চারা বটতলা এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের প্রত্যেকের কাছে বিদেশি পিস্তল, ওয়ান শুটার গান ও কয়েক রাউন্ড গুলি পাওয়া যায়। এ সময় হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত বিভিন্ন সরঞ্জামাদি উদ্ধার করা হয়।

সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম বলেন, স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী নিহতের ঘটনায় বর্তমান পরিষদের চেয়ারম্যান, সদর থানা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ খানসহ ৩৪ জনের নামে হত্যা মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সবাইকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

পাবনার পুলিশ সুপার মহিবুল ইসলাম খান বলেন, ডিবি ও পুলিশের যৌথ অভিযানে নলদহ বাজার এলাকা ও কোলাদি চারাবটতলা গ্রামসহ বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে এ পর্যন্ত মোট ৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

আগামী ২৬ ডিসেম্বর চতুর্থ ধাপে পাবনা সদর উপজেলার ১০ ইউনিয়নে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। ইউপি ভোটকে সামনে রেখে গত শনিবার সকালে আওয়ামী লীগের ‘বিদ্রোহী’ চেয়ারম্যান প্রার্থী (ঘোড়া প্রতীক) সুলতান মাহমুদের ১৫-২০ জন সমর্থক প্রচারণায় বের হন।

এ সময় আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান আবু সাঈদ খানের লোকজনের সঙ্গে তাদের গোলাগুলির ঘটনা ঘটে বলে জানান স্থানীয়রা। এতে সুলতান মাহমুদের চাচাতো ভাই স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী ইয়াসিন আলমসহ দুই পক্ষের অন্তত ২৫ জন আহত হন। পরে তাদের উদ্ধার করে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার সময় ইয়াসিন আলম মারা যান। এ ঘটনায় ৩৪ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয় আরও ৪০-৫০ জনের নামে হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে। এ ঘটনায় ইউনিয়নের সব পদে নির্বাচন স্থগিত করেছে নির্বাচন কমিশন।

রাকিব হাসনাত/এমএসআর