কুয়াকাটায় প্রকল্পের অব্যবস্থাপনায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক

পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় নির্মাণাধীন আবাসন প্রকল্প ব্যবস্থাপনার খামখেয়ালিতে চাষ অনুপযোগী হয়ে পড়েছে শতাধিক একর তিন ফসলি চাষের জমি। এতে সরাসরি ক্ষতির মুখে পড়েছেন অর্ধশতাধিক ক্ষুদ্র প্রান্তিক কৃষক। ফসলহানিসহ জমি অনাবাদি থাকায় পড়েছেন আর্থিক অনটনের মুখে।

এদিকে ক্ষতিপূরণসহ সংশ্লিষ্ট প্রকল্পসহ প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও এসব কৃষক পাচ্ছেন না কোনো প্রতিকার। প্রকল্প ব্যবস্থাপক আজাহার মাহমুদের অব্যাহত হুমকিতে ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছেন এসব ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক। সমস্যার সমাধানে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপের আশায় এসব কৃষক।

সরেজমিন স্থানীয় ব্যক্তিরা জানান, দেশের তৃতীয় সমুদ্রবন্দর পায়রার জন্য ভূমি অধিগ্রহণের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পুনর্বাসনে জেলার কলাপাড়া উপজেলার ধুলাসর ইউনিয়নের ধুলাসর মৌজা থেকে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ৭০০ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়। পার্শ্ববর্তী সমুদ্রতীর থেকে ড্রেজারের মাধ্যমে বালু উত্তোলন করে নিচু আবাদি এ পরিমাণ জমি ভরাটের মাধ্যমে উন্নয়নের জন্য ২০১৯ সালে কাজ শুরু করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এতে বালুর সঙ্গে লোনা পানি প্রবেশ করে। পানিনিষ্কাশনের কালভার্ট বন্ধ থাকায় এ লোনা পানি ছড়িয়ে পড়ে আশপাশের আবাদি জমিতে।

প্রকল্পের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক

ফলে নষ্ট হয়ে যায় শতাধিক একর আবাদি জমির ফসল। লোনা পানিতে ডুবে যায় পুকুর, মাছের ঘেরসহ ডোবা। ক্ষতির মুখে পড়েন মাছচাষিরা। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা জানান, বিষয়টি বারবার প্রকল্প ব্যবস্থাপক আজাহার মাহামুদকে অবহিত করা হলেও অভিযোগকারী কৃষকদের লাঞ্ছিত, অপমানিতসহ নৌবাহিনী এবং প্রশাসনের মাধ্যমে দেখে নেওয়ার হুমকি প্রদান করা হয়।

নেছার উদ্দিন, মেজবাহ উদ্দিন, মাসুমসহ ক্ষতিগ্রস্ত প্রায় ২০ জন কৃষক সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের কাছে ক্ষতি দাবি করে ঢাকা পোস্টকে জানান, ২০১৯ ও ২০২০ সালে তাদের প্রায় সাড়ে তিন হাজার মণ ধান উৎপাদন হতো। এ ছাড়া সবজিসহ মৌসুমি ফসলে আরও প্রায় ৩০ লাখ টাকা আয় হতো।

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক লুৎফর রহমান ঢাকা পোস্টকে জানান, লোনা পানিতে ডুবে থাকা জমির মধ্যে চলতি মৌসুমে ৮০ একর জমিতে ধান চাষ করলেও স্বাভাবিকের এক-তৃতীয়াংশ ধান উৎপাদন হয়নি।

প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করে হাসনে হেনা বলেন, ফসলহানিসহ জমির উর্বরতা শক্তি কমে যাওয়ায় কম উৎপাদনের ফলে পরিবার নিয়ে আমার নিদারুন কষ্টে দিন পার করছি।

অভিযোগ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রকল্প ব্যবস্থাপক আজাহার মাহমুদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ডক ইয়ার্ডের থেকে সাব-কন্ট্রাক্ট নিয়ে কাজ করছি। প্রকল্পের কোনো বিষয়েই কথা বলার এখতিয়ার আমার নেই। কাজেই এ বিষয়ে কোনো সহযোগিতা করতে পারছি না।

কাজী সাঈদ/এনএ