পান সংগ্রহের পর বাছাই করছেন কৃষকরা

চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলায় বাণিজ্যিকভাবে পান ও সুপারি চাষ হয়ে থাকে। বহু বছর ধরে হাইমচর পান-সুপারির জন্য বিখ্যাত। এ খ্যাতি ছড়িয়ে পড়েছে দেশজুড়ে। প্রতিবছরও বেড়ে চলেছে পান-সুপারি চাষ। এতে স্থানীয় চাহিদা পূরণ করে দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হচ্ছে পান ও সুপারি। ফলে কৃষকেরা আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ায় এ চাষে ঝুঁকছেন তারা।

হাইমচর উপজেলা কৃষি কার্যালয়ের তথ্য সূত্রে জানা যায়, হাইমচর উপজেলায় ২১৭ হেক্টর জমিতে পান এবং ৩১০ হেক্টর জমিতে সুপারি চাষ হয়ে থাকে। এই চাষের সঙ্গে আবার প্রায় ৯ শতাধিক কৃষক জড়িত। চাঁদপুরের আটটি উপজেলার মধ্যে পান ও সুপারি উৎপাদনে হাইমচরের ঐতিহ্য রয়েছে। এর মধ্যে উপজেলার দক্ষিণ আলগী, গন্ডামারা, কৃষ্ণপুর ও বাজাপ্তি গ্রামে পান চাষ হয় বেশি।

কৃষক বারাকাত ও আল-আমিন জানান, হাইমচর উপজেলায় কৃষিমাঠ খুব কমই রয়েছে। যেগুলো রয়েছে, তাতে পান চাষের উপযোগী করে চাষ করা হচ্ছে। বর্তমান মৌসুমে বাজারে পান বেশি বিক্রি হচ্ছে। ঠিকঠাক পান চাষে সফল হলে তিন থেকে পাঁচ লাখ টাকা আয় করা সম্ভব। অধিকাংশ কৃষক পার্শ্ববর্তী ফরিদগঞ্জ উপজেলার রামপুর বাজার, চাঁদপুর সদর ও মতলবে পান বিক্রি করতে নিয়ে যান। এ জন্য কৃষকদের পান বিক্রির জন্য এক দিন আগেই প্রস্তুতি নিতে হয়।

স্থানীয় ব্যক্তিরা জানান, হাইমচরে প্রায় প্রতিটি বাড়িতে অতিথি আপ্যায়নে পান-সুপারি অন্যতম উপকরণ। যেকোনো অনুষ্ঠানে পান-সুপারি থাকবেই। একসময় এ জেলার বাড়ির আঙিনায় নিজেদের প্রয়োজনে পান-সুপারি লাগাতেন। কিন্তু বর্তমানে এটি বাণিজ্যিকভাবে লাভবান হওয়ায় এ চাষে ঝুঁকছেন সবাই।

পান বিক্রেতা মোহাম্মদ হোসেন বলেন, বাজারে সব সময় পান-সুপারির চাহিদা থাকে। প্রতি বিড়ায় ১৫ থেকে ২০ টাকাও লাভ হয়। আমরা অন্য জায়গা থেকে পান কিনি না। শুধু হাইমচর থেকেই পান কিনে থাকি। হাইমচরে দীর্ঘদিনের পান-সুপারির খ্যাতি রয়েছে।

এ বিষয়ে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. জালাল উদ্দিন ঢাকা পোস্টকে বলেন, চাঁদপুর জেলার মধ্যে শুধু হাইমচর উপজেলাতেই পান-সুপারির চাষ হয়, যা এখনো চলামান রয়েছে। সেখানকার মানুষ বারো মাস পান চাষে আগ্রহী থাকেন। পান চাষে আমরা কৃষকদের সব সময়ই সহযোগিতা করে থাকি।

শরীফুল ইসলাম/এনএ