খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছে অসহায়রা

দেশের সর্ব উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে দিন দিন বাড়ছে শীতের দাপট। ঘন কুয়াশা আর শৈত্যপ্রবাহে কনকনে ঠান্ডায় কাঁপছে জেলার পাঁচ উপজেলার মানুষ। মাঘ মাসের এই তীব্র শীতে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন খেটে খাওয়া, দিনমজুর ও নিম্ন আয়ের মানুষেরা। তারা যেমন শীতের কারণে কাজে যেতে পারছেন না, তেমনি শীত নিবারণে গরম কাপড় না থাকায় অনেকেই বাড়ির আঙ্গিনায় কিংবা ফুটপাতে খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন। 

সোমবার (১ ফেব্রুয়ারি) সকালে জেলার বিভিন্ন গ্রাম ও হাটবাজারে অসহায় শীতার্তদের খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করতে দেখা গেছে। 

এদিকে তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শাহ জানান, সোমবার সকাল ৯টায় তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছ ৭ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে সকাল ৬টায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৭ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে তাপমাত্রা হ্রাস পাবে বলে জানান তিনি। 

জানা গেছে, পঞ্চগড়ের উত্তর দিকে অনেক কাছাকাছি হিমালয়ের অবস্থান। তাই উত্তর দিক থেকে বয়ে আসা হিমালয়ের হিম বাতাসের কারণে এ জেলায় শীতে তাপমাত্রা হ্রাস পেয়েছে। বেড়েছে শীতের প্রকোপ। সন্ধ্যা থেকে পরদিন সকাল পর্যন্ত পুরো জেলা ঘন কুয়াশায় ঢেকে থাকে। সঙ্গে হিম বাতাস বয়ে যাওয়ার কারণে শীতের দাপট আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে। বেলা বাড়ার সাথে সাথে কয়েক দিন আগে তাপবিহীন সূর্যের আলো দেখা মিললেও গত দুইদিন ধরে সূর্যের দেখা মিলছে না। 

ঘন কুয়াশা আর শৈত্যপ্রবাহে কনকনে ঠান্ডায় কাঁপছে জেলার পাঁচ উপজেলার মানুষ

ফলে কনকনে শীতে মানুষজন কাজ করতে পারছেন না। কাজ না পেয়ে বেকার সময় পার করছেন অনেকে। গরিব-অসহায়রা বাড়ির আঙ্গিনায় খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন। বাড়ির আঙ্গিনায় কিংবা ফুটপাতে খড়কুটো জ্বালিয়ে আগুন পোহাতে গিয়ে গত কয়েক বছরে বেশ কয়েকজন অগ্নিদগ্ধ হয়েছন। কয়েকজন মারাও গেছেন বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে। 

পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলাধীন দেবনগড়ের নিজবাড়ি এলাকার বাসিন্দা বৃদ্ধা ফজিরন নেছা বলেন, শীতকালে আমাদের মতো গরিব মানুষের দিনের বেলা খড়কুটোর আগুন ও রাতের বেলা দুই-একটা ছেঁড়া পাতলা কম্বলেই এখন সম্বল। আমাদের শীত নিবারণের জন্য গরম কাপড় নেই। তাই জীবনের জন্য ঝুঁকি নিয়ে আগুন পোহাতে হচ্ছে।

একই কথা বলেন ভজনপুর এলাকার পাথর শ্রমিক রবিউল হাসান। তিনি বলেন, গত বছর আগুন পোহাতে গিয়ে আমি আগুনে পড়ে গেছিলাম। শীতের দাপটে বাধ্য হয়ে আগুন পোহাতে হচ্ছে। শীতের কাপড় না থাক বাঁচতে তো হবে। তাই বাধ্য হয়ে ফুটপাতে আমরা আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছি। 

রনি মিয়াজী/আরএআর