অভাবের সংসার। দিন আনি দিন খাই। বৃষ্টি এলে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে অন্যের ঘরে গিয়ে উঠি। কখনো কল্পনাও করিনি একটি পাকা বাড়ির মালিক হবো। এখন নিজেকে পৃথিবীর সবচেয়ে সুখি মানুষ মনে হচ্ছে। উচ্ছ্বাসের সঙ্গে কথাগুলো বলছিলেন যশোর সদর উপজেলার হৈবতপুর ইউনিয়নের তীরেরহাট গ্রামের মুন্না হোসেন। 

অভাবের মধ্যে যার জীবন চলে সেই মুন্না হোসেন এখন নিজেকে পৃথিবীর সবচেয়ে সুখি মানুষ হিসেবে দাবি করছেন। তাকে এই সুখি মানুষের স্বাদ দিয়েছে আওয়ামী যুবলীগ। গৃহহীন কৃষি শ্রমিকের খুপড়ি ফেলে সেখানে ঘরটি বানিয়ে দিয়েছেন যশোর সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বিপুল। 

কেন্দ্রীয় যুবলীগের নির্দেশনা পেয়ে তিনি নিজ অর্থায়নে ঘরটি উপহার দেন মুন্নাকে। শনিবার সন্ধ্যায় নতুন বছরের প্রথম দিন মুন্না ও তার স্ত্রীর হাতে ঘরের চাবি তুলে দেন বিপুল।

গত ১ ডিসেম্বর দীর্ঘদিন পর যশোরের জেলা যুবলীগের বর্ধিতসভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভা থেকে কেন্দ্রীয় যুবলীগের নেতারা মানবিক যুবলীগের কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ঘরহীনদের বাড়ি করে দেয়ার জন্য জেলা যুবলীগ নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান। সেই আহ্বানে সাড়া দিয়ে জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী আনোয়ার হোসেন বিপুল নতুন বছরের প্রথম দিন মুন্না হোসেনের হাতে উপহার হিসেবে ঘরের চাবি তুলে দেন।

নতুন বছরে নতুন ঘরের চাবি হাতে পেয়ে আবেগে আপ্লুত মুন্না হোসেন বলেন, আমি কখনো কল্পনাও করতে পারিনি এমন একটি ঘরের মালিক হবো। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে অভাবের মধ্যে আমার দিন যায়। নিজের চাষের কোনো জমি নেই। অন্যের জমিতে দিনমজুর হিসেবে কাজ করি। কৃষিকাজ যখন না থাকে তখন অনেকটাই অর্ধাহারে-অনাহারে দিন কাটে। পেটে ক্ষুধা আবার বৃষ্টি এলে অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নিতে হতো। এটা যে কত কষ্টের তা বোঝাতে পারব না। এখন বৃষ্টি এলে নিজ ঘরে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে থাকতে পারব-এটা ভাবতে গেলেই নিজেকে পৃথিবীর সবচেয়ে সুখি মানুষ মনে হচ্ছে। 

তিনি বলেন, যুবলীগকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। ধন্যবাদ জানাচ্ছি সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন বিপুলকে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য আলমগীর হোসেন বলেন, মুন্না অত্যন্ত অভাবি মানুষ। তবে নীতিতে সে সৎ। এমন একজন মানুষকে স্বপ্নের মতো একটি বাড়ি উপহার দিয়ে যুবলীগ নেতা আনোয়ার হোসেন বিপুল একটি মানবিক কাজ করেছেন।

এ ব্যাপারে আনোয়ার হোসেন বিপুল বলেন, মুজিববর্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের একটি মানবিক উদ্যোগ হচ্ছে গৃহহীনদের ঘর করে দেয়া। আমি সদর উপজেলার ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে চারটি পরিবারকে ঘর করে দিয়েছি। আর যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ ভাই এবং সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হক নিখিল ভাইয়ের নির্দেশনা পেয়ে নিজের ব্যক্তিগত অর্থায়নে মুন্নাকে নববর্ষের উপহার হিসেবে ঘর দিয়েছি। যুবলীগের এই মানবিক তৎপরতায় অংশীদার হতে পেরে গর্ববোধ করছি।

জাহিদ হাসান/এমএএস