নরসিংদীতে আব্দুল আজিজ হত্যা মামলার প্রধান আসামি শফিক মিয়াকে গ্রেফতার ও বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন নিহতের পরিবারের সদস্য ও এলাকাবাসী। রোববার (২ জানুয়ারি) দুপুরে নরসিংদী প্রেসক্লাবের সামনে এই মানববন্ধন করা হয়।

এর আগে গত ৫ ডিসেম্বর পাঁচ দিন মৃত্যুর সঙ্গে নড়ে ভাড়াটের ছুরিকাঘাতে আহত অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় আব্দুল আজিজের।

নিহত আব্দুল আজিজ (৬২) নরসিংদী পৌর শহরের ব্রাহ্মণপাড়া মহল্লার বাসিন্দা। অভিযুক্ত প্রধান আসামি শফিক মিয়া (৪০) আব্দুল আজিজের বাড়ির সাবেক ভাড়াটে ও ময়মনসিংহ সদর উপজেলার মৃত্যুঞ্জয় স্কুল রোড এলাকার আব্দুল হেকিমের ছেলে।

মানববন্ধনে নিহতের পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করে বলেন, ময়মনসিংহের শফিক মিয়া নরসিংদী পৌর শহরের ব্রাহ্মণপাড়া মহল্লার আব্দুল আজিজের বাড়িতে ভাড়াটে হিসেবে বসবাস করতেন। সেই সুবাধে রেহেনা বেগম নামে অপর এক ভাড়াটের ঘরে যাতায়াত করতেন শফিক মিয়া। একপর্যায়ে রেহেনা বেগমের মেয়ে কুলসুম বেগমের (১৯) সঙ্গে শফিক মিয়ার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠলে ঘটনাটি জানাজানি হয়। এ ঘটনার পর বাড়ির মালিক আব্দুল আজিজ শফিককে বাড়ি থেকে বের করে দেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে শফিক মিয়া ও রেহেনা বেগম আজিজকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।

গত ২৯ নভেম্বর রাতে আব্দুল আজিজের ঘরের শয়নকক্ষে খাটের নিচে লুকিয়ে থাকেন শফিক। রাত ১২টার দিকে আজিজকে ছুরিকাঘাত করলে আজিজ শফিককে জাপটে ধরে চিৎকার শুরু করেন। এ সময় তার ছেলে-মেয়েরা এগিয়ে এলে তাদেরও ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যান। পালিয়ে যাওয়ার সময় শফিকুল তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন ও গেঞ্জি ফেলে যায়। একই সময় ঘরের বাইরে অবস্থান করতে দেখে রেহেনা বেগমকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে রেহেনা বেগম হত্যার পরিকল্পনার সত্যতা স্বীকার করেন।

গুরুতর আহত অবস্থায় আব্দুল আজিজকে প্রথমে নরসিংদী সদর হাসপাতাল ও পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ৫ ডিসেম্বর আজিজের মৃত্যু হয়।

এ ঘটনায় নিহতের মেয়ের জামাই মো. জাকির হোসেন বাদী হয়ে ৬ ডিসেম্বর নরসিংদী সদর মডেল থানায় মামলা করেন। মামলা করার প্রায় এক মাস অতিবাহিত হলেও পুলিশ অভিযুক্ত প্রধান আসামি শফিক মিয়াকে গ্রেফতার করতে পারেনি। আসামিকে দ্রুত গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়ে মানববন্ধন করেন নিহতের স্বজনরা।

নরসিংদী সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সওগাতুল আলম বলেন, আব্দুল আজিজ হত্যার ঘটনায় দুই আসামির মধ্যে রেহেনা বেগম নামে একজন গ্রেফতার হয়েছে। অপর আসামি শফিক পলাতক রয়েছে, তাকে গ্রেফতারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

রাকিবুল ইসলাম/এনএ