বান্দরবানে স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যার পর অপহরণের নাটক সাজানো স্বামী রেথোয়াইনু মার্মাকে (৩৮) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শুক্রবার (৭ জানুয়ারি) সকালে রাজবিলা এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। 

বিষয়টি ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করেছেন বান্দরবানের পুলিশ সুপার (এসপি) জেরিন আখতার। 

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ৬ জানুয়ারি গভীর রাতে স্ত্রী সিংম্যানু মার্মাকে কুপিয়ে হত্যা করে স্বামী রেথোয়াইনু মার্মা। পরে সন্ত্রাসীরা তাকে অপহরণ করে নিয়ে যাচ্ছে বলে স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বারকে ফোনে জানান তিনি। পরে তিনি পালিয়ে যান। খবর পেয়ে এলাকাবাসী রেথোয়াইনু মার্মার বাসায় গেলে তার স্ত্রীকে রক্তাক্ত অবস্থায় মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখে। পরে পুলিশ এসে সিংম্যানুর মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য নিয়ে যায়। সন্ত্রাসীদের হামলা ও অপহরণের বিষয়টি এলাকাবাসীর কাছে রহস্যজনক মনে হয়। সন্ত্রাসীদের আসার কোনো আলামত নেই এবং নিজের অপহরণের খবর ফোনে বলায় সন্দেহ আরও বেড়ে যায়। এর পর থেকে পাড়ার মানুষ পলাতক রেথোয়াইনু মার্মাকে খুঁজতে থাকে। রাতে তাকে রাজবিলা ইউনিয়নের থংজামা পাড়ার একটি পাহাড়ে দেখতে পেয়ে তা ঘেরাও কের রাখে এলাকাবাসী। পরে সকালে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। 

এ বিষয়ে স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার শৈসা চিং বলেন, সন্ত্রাসীদের হামলার আলামত দেখতে না পেয়ে এলাকাবাসীর সন্দেহ হয়। কারণ সন্ত্রাসীরা এলে তারা জানতে পারত। আর তাকে অপহরণ করলে সে নিজে ফোন দিতে পারত না। পরে পাড়ার মানুষ তাকে খুঁজতে থাকে। অবশেষে শুক্রবার সকালে এলাকাবাসী আটক করে পুলিশে সোর্পদ করে।

বান্দরবান পুলিশ সুপার (এসপি) জেরিন আখতার বলেন, আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। এ ছাড়া স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় একজনকে আটক করেছি। এ ব্যাপারে মামলার প্রস্তুতি চলছে। আটকের পর পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে তিনি জড়িত বলে স্বীকার করেছেন।

প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার (৬ জানুয়ারি) গভীর রাতে বান্দরবান সদর উপজেলার রাজবিলা ইউনিয়নের থংজামা পাড়া এলাকায় স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যা করে অপহরণের নাটক সাজিয়ে পালিয়ে যান রেথোয়াইনু মার্মা। তিনি রাজবিলা ইউনিয়নের থংজমা পাড়া গ্রামের বাসিন্দা। রেথোয়াইনু মার্মা ও সিংয়ানু মার্মা দম্পতির একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। দুইজনেরই এটি দ্বিতীয় বিয়ে। দীর্ঘদিন ধরে তাদের সম্পর্ক খারাপ যাচ্ছিল। এ কারণে সব সময় তাদের মধ্যে কলহ লেগে থাকত।

রিজভী রাহাত/আরআই