প্রকাশিত হচ্ছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই নোয়াখালীর বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জার আত্মজীবনীমূলক বই ‘সত্য যে কঠিন’। 

জানা যায়, আত্মজীবনীতে তিনি ব্যক্তিজীবনের পাশাপাশি দেশ, সমাজ ও সময়কে নির্মোহভাবে তুলে ধরেছেন। কাদের মির্জার শৈশব কাটে পাকিস্তানের দুঃশাসনের যাঁতাকলে, কৈশোরে তিনি প্রত্যক্ষ করেন একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ। তারপর স্বাধীন বাংলাদেশ, জাসদের উত্থান ও তাণ্ডব, বঙ্গবন্ধু হত্যা, খুনি মোস্তাকের পথ বেয়ে মেজর জিয়ার ক্ষমতা দখল, এরশাদের ক্ষমতা দখল, কারফিউ, প্রতিবাদ-প্রতিরোধ, গ্রেফতার, হামলা-মামলা প্রভৃতি জাতীয় ঘটনাবলির প্রবাহে কাদের মির্জার ব্যক্তিজীবন আবর্তিত। তিনি নিজেও স্বৈরাচারের খড়গের কবলে পতিত হয়েছিলেন। ব্যক্তিজীবনের আবেগ, অনুভূতি, পাওয়া না-পাওয়া, আনন্দ-বেদনা, হাসি-কান্না, মান-অভিমান, ক্লেদ-হতাশা, সুখ-দুঃখের কথকতায় পরিপূর্ণ এই গ্রন্থ। বইটির বুনন ও বয়ানে শ্লেষ, হাস্যরস ও কৌতুকাবহ পাঠকের মনে আনন্দের উদ্রেক করবে। তথ্য, উপাত্ত, ইতিহাস-ঐতিহ্য আকাঙ্ক্ষার নিবৃত্তি ঘটাবে।

বইটির প্রকাশক এএসএম ইউনুস ঢাকা পোস্টকে বলেন, বইটিতে কাদের মির্জা তার জীবনের বিভিন্ন ঘাত-প্রতিঘাত তুলে ধরেছেন। এই আত্মজীবনীতে পাঠক কাদের মির্জা সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পারবে। বর্তমান সময়ের কাদের মির্জার রাজনৈতিক সহযোদ্ধারা ছাড়াও আগামী প্রজন্মের জন্য বইটি বিদ্রোহ-বিপ্লবের অমর স্মারক হবে। 

প্রকাশক এএসএম ইউনুস আরও বলেন, ইন্তামিন প্রকাশনীর আয়োজনে আগামী ১৩ জানুয়ারি (বৃহস্পতিবার) জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে বইটির মোড়ক উন্মোচন করা হবে। আশা করি, বইটি পাঠকপ্রিয়তা অর্জন করবে। 

বই সম্পর্কে কাদের মির্জা ঢাকা পোস্টকে বলেন, আত্মজীবনী লিখতে অনেক সময়ের প্রয়োজন হয়। আমি দীর্ঘ ৪৮ বছর ধরে রাজনীতি করছি। আমার জীবনে অনেক কিছু দেখেছি। পাহাড়সম বাধা ডিঙিয়ে দুর্বার ছুটে চলেছি পথে-প্রান্তরে, গরিব-অসহায়ের অন্তরে-অন্দরে। সত্য বলায় কখনও পিছপা হইনি। প্রাণ যাবে তবুও সত্য বলা থেকে কেউ বিরত রাখতে পারবে না। ইনশাআল্লাহ। 

‘অন্যায়ের কাছে কভু নত নাহি শির/ ভয়ে কাঁপে কাপুরুষ লড়ে যায় বীর’ পঙক্তি উল্লেখ করে কাদের মির্জা বলেন, দলের বড় পদ পদবি না থাকলেও জীবনে অনেক কিছু দেখেছি। জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে মৃত্যুভয় উপেক্ষা করে দুর্নীতি, জুলুম, অন্যায়-অত্যাচার ও দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে কথা বলেছি। আমি মনে করি, ‘সত্য যে কঠিন’ বইটি বিদ্রোহ-বিপ্লবের অমর স্মারক হিসেবে ইতিহাসে ঠাঁই করে নিবে। 

উল্লেখ্য, আবদুল কাদের মির্জা নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বড় রাজাপুর গ্রামে ১৯৫৯ সালের পহেলা ডিসেম্বর এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে বুকে ধারণ করে দেশরত্ন শেখ হাসিনার কর্মী হিসেবে তিনি কাজ করে যাচ্ছেন।

তিনি মাস্টার মোশারফ হোসেন ও ফজিলাতুননেছার ষষ্ঠ সন্তান। তারা ১১ ভাই-বোন। ভাইদের মধ্যে মির্জা কাদের তৃতীয়। তার নানা খান সাহেব মৌলভী আমিন উল্লাহ ছিলেন ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক আমলের এমএলএ। তার অগ্রজ ওবায়দুল কাদের দেশের জাতীয় রাজনীতিতে খ্যাতিমান ব্যক্তিত্ব। বর্তমানে মির্জা কাদের চতুর্থবারের মতো বসুরহাট পৌরসভার মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। 

সম্প্রতি ‘অপরাজনীতি ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে সত্য বচনের’ কারণে তিনি জাতীয়ভাবে বেশ আলোচিত হন।

হাসিব আল আমিন/এইচকে