প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সিনিয়র সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া বলেছেন, আশ্রয়ণ প্রকল্প গরিব মানুষের মুখে হাসি এনে দিয়েছে। প্রকল্পটি গৃহহীন মানুষের জন্য শুধু বাসস্থানই নয়, সুপেয় পানি ও সেনিটেশন সুবিধাও দিয়েছে। যা আমাদের এসডিজির লক্ষ্যে পৌঁছাতে সহায়তা করছে। 

তিনি বলেন, মানুষের জন্য কিছু করা যে কোনো সরকারি কর্মকর্তার জীবনে শ্রেষ্ঠ কাজ। মুজিববর্ষে গৃহহীন ভবঘুরে অসহায় ৭ লক্ষাধিক মানুষকে ঘরের আওতায় আনা হয়েছে। চলতি বছর আরও এক লাখ মানুষকে জমিসহ ঘরের আওতায় আনা হবে। এসব রঙিন ঘরে শুধু এসব মানুষের জীবনই পরিবর্তন হচ্ছে না, তাদের বংশধরদেরও পরিবর্তন হচ্ছে। 

মঙ্গলবার (১১ জানয়ারি) বিকেলে যশোর সদর উপজেলার চাঁচড়ায় নির্মিত ‘শতবর্ষ আশ্রয়ণ প্রকল্প’ এবং নরেন্দ্রপুর ইউনিয়নের সাহাবাটি মৌজায় ‘আশ্রয়ণ প্রকল্প-৭১’ এর  নির্মাণাধীন ঘর পরিদর্শন শেষে তোফাজ্জল হোসেন মিয়া সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। 

এর আগে  দুপুরে যশোরের পিটিআই অডিটোরিয়ামে মুজিববর্ষ উপলক্ষে আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় তৃতীয় পর্যায়ে গৃহ নির্মাণ কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বিভাগীয় কমিশনার এবং জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাগণের সমন্বয়ে প্রশিক্ষণে তিনি প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

তোফাজ্জল হোসেন মিয়া বলেন, স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের তত্ত্বাবধানে আশ্রয়ণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছেন উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা। তাদের দায়িত্ব হলো সরকারের সিদ্ধান্ত সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করা। সবাইকে ঘর প্রদানের মাধ্যমে জেলা উপজেলাকে ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত ঘোষণা করতে হবে। 

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ রয়েছে- ভূমিহীনদের জন্য খাস জমি পাওয়া না গেলে জমি কিনতে হবে। কেনা জমিতে ঘর নির্মাণ করে গৃহহীনদের পুনর্বাসন করতে হবে। আশ্রয়ণে যাতায়াতের জন্য রাস্তা নির্মাণ ও সংস্কারের জন্যও অর্থ দেওয়া হচ্ছে। স্বচ্ছতার সঙ্গে কাজ করতে হবে। আশা করছি তৃতীয় ধাপেও সকল ঘর সফলভাবে নির্মাণ করে সুবিধাভোগীদের হাতে তুলে দেওয়া হবে। 

এ সময় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোহসীন, আশ্রয়ণ- ২ প্রকল্পের পরিচালক (যুগ্ম সচিব) আবু সালেহ মোহাম্মদ ফেরদৌস খান, খুলনা বিভাগীয় কমিশনার ইসমাইল হোসেন, যশোরের জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। 

সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম মুনিম লিংকন জানান, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আশ্রয়ণ প্রকল্পের অধীনে যশোরের চাঁচড়ায় ১০০টি ঘর ভুক্তভোগীদের হাতে দেওয়া হয়েছে। ওই প্রকল্পের নাম দেওয়া হয়েছে ‘শতবর্ষ’ প্রকল্প। প্রকল্পের আগে ঘনবসতি আর দুর্গন্ধময় পরিবেশের কারণে অনেকে যেটাকে বস্তি বলে অভিহিত করতো, এখন ঘর নির্মাণের ফলে সেটাই হয়েছে জেলার দর্শনীয় স্থান। সেখানে ১০০টি পরিবারের জন্য নির্মিত এই ঘরের পাশাপাশি রয়েছে বিনোদন কেন্দ্র, পুকুর, বৃক্ষরাজি শোভিত সৃজিত বনায়ন, পাকা সড়ক, মসজিদসহ নানা সুবিধা। চলতি বছরে নরেন্দ্রপুর ইউনিয়নের সাহাবাটি মৌজায় এক একর ৭৮ শতক জমি উদ্ধার করে সেখানে ৭১টি ঘর নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। প্রতিটি ঘর নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা। প্রায় কাজ শেষ হওয়া এই আশ্রয়ণ-৭১ প্রকল্পটি উপকার ভোগীদের হাতে আগামী মার্চ মাসে হস্তান্তর করা হবে।  

জাহিদ হাসান/আরএআর