সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলা সদর ইউনিয়নের টানমেউহারী গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে স্ত্রী শাদিনা বেগমের (৪৯) গলাকাটা ও স্বামী বাচ্ছু মিয়ার (৫৬) ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। বুধবার (১২ জানুয়ারি) বিকেল তিনটার দিকে দুজনের লাশ উদ্ধার করে ধর্মপাশা থানা পুলিশ।

বিষয়টি ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করেছেন ধর্মপাশা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সোহেল মাহমুদ।

ধর্মপাশা থানা পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার টানমেউহারী গ্রামের বাসিন্দা বাচ্ছু মিয়া (৫৬) ও তার স্ত্রীর শাদিনা বেগমের (৪৯) দাম্পত্য জীবনে তাদের পাঁচ মেয়ে ও এক ছেলেসন্তান রয়েছে। বাচ্ছু মিয়া একজন মাছের ব্যবসায়ী। এ ব্যবসায় তিনি তেমন লাভবান হচ্ছিলেন না। ফলে আর্থিকভাবে ঋণগ্রস্ত হয়ে হতাশ হয়ে পড়েন তিনি। এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে প্রায়ই কলহ হচ্ছিল।

মা-বাবার সঙ্গে একই বাড়িতে বেশ কিছুদিন ধরে তাদের বড় মেয়ে রিপা আক্তার (৩৩) স্বামী-সন্তান নিয়ে বসবাস করে আসছেন। বুধবার সকাল নয়টার দিকে বাচ্চু-শাদিনার মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। সকাল ১০টার দিকে রিপা তার ছোট ভাই অনিক মিয়াকে (১৪) নবম শ্রেণিতে ভর্তি করার জন্য উপজেলা সদরের জনতা মডেল উচ্চবিদ্যালয়ে যান। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রিপার ভাগনে আবু রায়হান (১০) রিপাকে মোবাইল ফোনে জানায়, তারা আবার দরজা বন্ধ করে ঝগড়া শুরু করেছেন।

পরে রিপা ৯৯৯ কল করে এ নিয়ে পুলিশের সহায়তা চান। বেলা একটার দিকে রিপা বাড়িতে গিয়ে তার মা-বাবার বসতঘরের দরজা বন্ধ দেখতে পান। এদিকে বেলা পৌনে দুইটার দিকে ধর্মপাশা থানার ওসি মো. খালেদ চৌধুরীও বাড়িতে উপস্থিত হন। পরে এলাকাবাসীর সহায়তায় প্রথমে টিনের চালা খুলে ও পরে ঘরের দরজা ভেঙে বসতঘরের ভেতর থেকে স্ত্রীর গলাকাটা ও স্বামীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

রিপা আক্তার বলেন, আমার আব্বা বিল-বাদারের ব্যবসা করতাইন। এই ব্যবসায় তেমন লাভ অইতাছিল না। সব মিলাইয়া এই বছর আব্বার ৮৫ হাজার টাকা ঋণ অইছে। এই ঋণের টেহা লইয়া আমার আম্মার সঙ্গে আব্বার প্রায়ই ঝগড়াও অইত। আউজগা সহালেও ঝগড়া অইছে। দরজা লাগাইয়া ঝগড়া শুরু অইছে হুইন্না আমি ৯৯৯-এ কল দিছি। আমার মনে অয় ঘরে থাকা ধারালো দা দিয়ে আব্বা আম্মার গলা কাটছে। হরে হেইন নিজে গলায় রশি দিয়া ফাঁস লইয়া মরছইন।

ধর্মপাশা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সোহেল মাহমুদ বলেন, পারিবারিক কলহের জের ধরে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে এ ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে। ময়না তদন্তের জন্য লাশ সুনামগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে।

সাইদুর রহমান আসাদ/এনএ