‘দিন আনি দিন খাই। এমনও আছে এক বেলা না খেয়েও দিন পার করেছি। তবু কারোর কাছে কিছুই চাইনি। সরকারিভাবে কখনো কিছুই জোটেনি কপালে। আজ হুইলচেয়ার পেয়ে আমার ছেলেটা খুশিতে আত্মহারা।’

এভাবেই কথাগুলো ব্যক্ত করছিলেন হুইলচেয়ার পাওয়া চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার দৌলতদিয়াড় গ্রামের রুপমের বাবা শাহিন হাসান। 

চুয়াডাঙ্গায় তারাদেবী ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে একযোগে ২৫ প্রতিবন্ধীর মাঝে হুইলচেয়ার বিতরণ করা হয়েছে। রোববার (১৬ জানুয়ারি) দুপুরে চুয়াডাঙ্গা শহরের পান্না সিনেমা হল চত্বরে এ হুইলচেয়ারগুলো বিতরণ করা হয়।

আলমডাঙ্গা উপজেলার নান্দবার গ্রামের তোফাজ্জেল হোসেন বলেন, আমার ছেলে সিরাজুল ইসলাম জন্ম থেকে শারীরিক প্রতিবন্ধী। কারোর সহযোগিতা ছাড়া চলাফেরা করতে পারে না। হুইলচেয়ার কেনার সামর্থ্যও ছিল না আমার। আজ আমার ছেলেকে হুইলচেয়ার দিল ওই স্যার। অনেক খুশি হয়েছি। এখন থেকে আমার ছেলে কারও সহযোগিতা ছাড়াই ঘোরাঘুরি করতে পারবে।

তারাদেবী ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ও ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (এফবিসিসিআই) ভাইস প্রেসিডেন্ট, বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক দিলীপ কুমার আগরওয়ালার সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন চুয়াডাঙ্গার পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাহিদ গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাহিদুজ্জামান টরিক।

পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলাম বলেন, তারাদেবী ফাউন্ডেশন সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষের সহযোগিতা, বিনামূল্যে অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস, করোনাকালীন রোগীদের মাঝে বিনামূল্যে অক্সিজেন সিলিন্ডার বিতরণ করে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে, যা প্রশংসনীয়। আমিও অনেক সাহায্যপ্রার্থীকে এখানে পাঠাই। এভাবেই সামর্থ্যবানদের এগিয়ে আসতে হবে।

তারাদেবী ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান দিলীপ কুমার আগরওয়ালা বলেন, প্রতিবন্ধীদের পেছনে শ্রম দিতে হবে। তারা যেন পিছিয়ে না থাকে, এ জন্য কাজ করে যাচ্ছি তাদের নিয়ে। সমাজে তাদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

এ সময় বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন খুলনা চেম্বার অব কমার্সের পরিচালক কাজী মাসুদুল ইসলাম, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ওয়ায়েচ কুরুনি টিটো, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. জানিফ, অটিস্টিক স্কুলের পরিচালক কাওসার আহমেদ প্রমুখ। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার ৪ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মাফিজুর রহমান মাফিসহ প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা।

আফজালুল হক/এনএ