অনেক আশা নিয়ে বিদ্যালয়ে ভর্তি করা হয়েছিল বহুল আলোচিত মাগুরায় মাতৃগর্ভে গুলিবিদ্ধ সেই শিশু সুরাইয়াকে। কিন্তু দুটি পা, একটি হাত এবং একটি চোখ সম্পূর্ণ অকার্যকর হাওয়ায় শ্রেণি পাঠে অংশ নেওয়া তার জন্য খুবই কষ্ট হচ্ছিল। বেশি অসুস্থ হওয়ায় বিদ্যালয় আসা বন্ধ করে দেয় সুরাইয়া।

এ খবর জানার সঙ্গে সঙ্গেই শিশু সুরাইয়ার উন্নত চিকিৎসার জন্য সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিলেন মাগুরা-১ আসনের সংসদ সদস্য মো. সাইফুজ্জামান শিখর। ঢাকার সিআরপি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে সুরাইয়াকে। সেখানে ফিজিওথেরাপিসহ অন্যান্য চিকিৎসা দেওয়া হবে তাকে।

সোমবার (১৭ জানুয়ারি) সুরাইয়ার বাবা বাচ্চু ভূঁইয়া মেয়ের ঢাকা সিআরপির হাসপাতালে ভর্তির খবরটি নিশ্চিত করে ঢাকা পোস্টকে বলেছেন, সবাই দোয়া করবেন যেন আমার মেয়ে ভালো হয়ে আবার স্কুলে যেতে পারে।

তিনি আরও বলেন, আমার মেয়ের দুটি পা ও একটি হাত অকেজো। আর একটি চোখ আগেই নষ্ট হয়ে গেছে। ডাক্তাররা বলেছেন, ভালো চিকিৎসা না করালে বাঁ চোখটি নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে পারছিলাম না। এই খবর জেনে আমাদের এমপি সাহেব আমার মেয়ের চিকিৎসার ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন। এ জন্য আমি এমপি সাহেবের কাছে কৃতজ্ঞ।

এ বিষয়ে মাগুরা-১ আসনের সংসদ সদস্য মো. সাইফুজ্জামান শিখ ঢাকা পোস্টকে বলেন, কিছু দুর্বৃত্তের কারণেই আজ শিশু সুরাইয়ার এ অবস্থা। আমি জেনেছি তার উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজন। তাই ঢাকার একটি হাসপাতালে তাকে ভর্তি করা হয়েছে। আমি আমৃত্যু সুরাইয়ার জন্য সব ধরনের সহযোগিতা করব।
 
মাগুরা সরকারি পুলিশ লাইনস সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রোকসানা আক্তার বলেন, লেখাপড়ার প্রতি প্রবল আগ্রহ রয়েছে সুরাইয়ার। তবে শারীরিক ভারসাম্যহীনতার কারণে অন্য শিশুদের মতো দাঁড়াতে পারে না, খেলাধুলা করতে পারে না। আমরা চাই সুরাইয়া সুস্থ হয়ে আবার বিদ্যালয় ফিরে আসুক। আমরা সব শিক্ষক তার প্রতি বিশেষভাবে খেয়াল রাখব।

উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে ২৩ জুলাই মাগুরা পৌরসভার দোয়ারপাড় এলাকায় দুপক্ষের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হন গর্ভবতী নাজমা বেগম। মায়ের পেটে থাকায় গুলিবিদ্ধ হয় সুরাইয়া। পরে মাগুরা ২৫০ শয্যা সদর হাসপাতালে ডা. শফিউর রহমানের অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে পৃথিবীর আলো দেখে সুরাইয়া। কিন্তু জন্মের পর থেকেই সুরাইয়ার কোমর থেকে দুটি পায়ের নিচের অংশ অকেজো হয়ে যায়। একটি চোখ ও একটি হাত সম্পূর্ণ অকার্যকর হয়। এখন সে হাঁটতে পারে না।

গত ২ জানুয়ারি মাগুরা সরকারি পুলিশ লাইনস সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি করা হয় সুরাইয়াকে। মায়ের সহযোগিতায় কয়েক দিন বিদ্যালয়ে আসে সুরাইয়া। কিন্তু হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ায় বিদ্যালয়ের আসা বন্ধ করে দেয় সে।

এ কে এম অপূর্ব/এনএ