মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার তেরাইল গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে চলা সেউটিয়া খালের ওপর প্রায় ৪০ বছর আগে কালভার্টটি নির্মাণ করা হয়েছে। বর্তমানে এটি ব্যবহারের অনুপযোগী হলেও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে ছয়টি গ্রামের মানুষ। কিন্তু সংস্কারের কোনো উদ্যোগ নেয়নি কর্তৃপক্ষ। যেকোনো সময় এটি ভেঙে পড়তে পারে। প্রয়োজনের তাগিদে, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে শিশু, নারী, পুরুষসহ অসুস্থ ও বয়স্কদের। উপায়ান্তর না পেয়ে স্থানীয়রা বাঁশের খুঁটি দিয়ে এটিকে ভেঙে পড়া থেকে রক্ষা করেছে।

নির্মাণকালে মাটি ধসে তিন নির্মাণশ্রমিক মারা যান। মাঠের ফসল ঘরে তোলা এবং উপজেলার সঙ্গে যোগাযোগের জন্য ছয়টি গ্রামের মানুষের একমাত্র কালভার্ট এটি। বর্তমানে কালভার্টটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় কৃষকেরা ফসল নিয়ে বড় কষ্টে আছে

তেরাইল গ্রামের কৃষক হজরত আলী, হাসেম আলী জানান, গাংনী উপজেলা শহরে যেতে ছয়টি গ্রাম তেরাইল, দেবীপুর, ভরাট, দুর্লভপুর, কল্যাণপুর, চককল্যাণপুরের মানুষের যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম এ কালভার্ট। সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে এটির ওপর যানবাহনের চাপ বাড়তে থাকে। তিন বছর হলো এটি ভেঙেছে। কিন্তু নির্মাণের কোনো উদ্যোগ নেয়নি কর্তৃপক্ষ। যে কারণে মানুষ রয়েছে চরম বিপাকে। পাঁচ মিটার দৈর্ঘ্যের এ কালভার্টটি প্রায় ৪০ বছর আগে নির্মিত হয়।

তেরাইল গ্রামের কৃষক কাজল ও ফজর আলী জানান, নির্মাণকালে মাটি ধসে তিন নির্মাণশ্রমিক মারা যান। মাঠের ফসল ঘরে তোলা এবং উপজেলার সঙ্গে যোগাযোগের জন্য ছয়টি গ্রামের মানুষের একমাত্র কালভার্ট এটি। বর্তমানে কালভার্টটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় কৃষকেরা ফসল নিয়ে বড় কষ্টে আছে।

বামন্দী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম বিশ্বাস জানান, জনগুরুত্বপূর্ণ কালভার্টটি প্রায় তিন যুগ আগে নির্মিত হয়। এরপর কখনো সংস্কারের উদ্যোগ নেয়নি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। বিভিন্ন সময় উপজেলা প্রকৌশল কার্যালয়ে যোগাযোগ করা হয়েছে। কোনো কাজ হয়নি। তাই স্থানীয়দের সহযোগিতায় বাঁশের খুটি দিয়ে কালভার্টটি রক্ষা করার চেষ্টা করেছি। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কৃষকরা মাঠ থেকে তাদের ফসল ঘরে তুলছেন। স্থানীয়রা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন।

সম্ভবত ১৯৭৫ সালে কালভার্টটি নির্মিত হওয়ার পর আর মেরামত করা হয়নি। বর্তমানে এর স্লাব প্রায় ভেঙে পড়ার উপক্রম। এর নিচে বাঁশের খুঁটি দিয়ে ভেঙে পড়া থেকে রক্ষা করা হয়েছে। যেকোনো সময় দুর্ঘটনাও ঘটতে পারে । আমি বিষয়টি সরেজমিনে দেখেছি। এটি অপসারণ করে নতুন কালভার্ট করা প্রয়োজন। আমরা প্রকল্প তৈরি করে পাঠিয়েছি। আশা করি খুব দ্রুত কালভার্টটি পুনর্নির্মাণ করা হবে

গোলাপ আলী শেখ, উপজেলা প্রকৌশলী, গাংনী

কালভার্টটি প্রায় ভেঙে পড়ার উপক্রম। এর এক পাশ দেবে গেছে। পাঁচ-ছয় মাস আগে কালভার্টটির ছাদের এক কোনা ভেঙে পড়ে। এখন যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে। এটির নিচে বাঁশের খুঁটি দিয়ে কোনো রকমে চলাচল উপযোগী করে রাখা হয়েছে বলে জানান চেয়ারম্যান।

এ বিষয়ে গাংনী উপজেলা প্রকৌশলী গোলাপ আলী শেখ জানান, সম্ভবত ১৯৭৫ সালে কালভার্টটি নির্মিত হওয়ার পর আর মেরামত করা হয়নি। বর্তমানে এর স্লাব প্রায় ভেঙে পড়ার উপক্রম। এর নিচে বাঁশের খুঁটি দিয়ে ভেঙে পড়া থেকে রক্ষা করা হয়েছে। যেকোনো সময় দুর্ঘটনাও ঘটতে পারে । আমি বিষয়টি সরেজমিনে দেখেছি। এটি অপসারণ করে নতুন কালভার্ট করা প্রয়োজন। আমরা প্রকল্প তৈরি করে পাঠিয়েছি। আশা করি খুব দ্রুত কালভার্টটি পুনর্নির্মাণ করা হবে।

এনএ