জাতীয় পতাকার বিকৃতি: ৫০০ টাকা মুচলেকায় ১৯ শিক্ষক-কর্মকর্তার জামিন
জামিন মঞ্জুরের পর আদালত থেকে বেরিয়ে যাচ্ছেন বেরোবির ১৯ শিক্ষক-কর্মকর্তা
মহান বিজয় দিবসে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) জাতীয় পতাকা বিকৃতি করে অবমাননার ঘটনায় করা মামলায় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক তাবিউর রহমানসহ ১৯ শিক্ষক-কর্মকর্তাকে জামিন দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (০৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ৫০০ টাকা মুচলেকায় তাদের জামিন মঞ্জুর করেন রংপুরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৩-এর বিচারক ফজলে এলাহী খান। এ সময় আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
বিজ্ঞাপন
আদালতের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা (জিআরও) রাফিউল ইসলাম রাফি বলেন, গত ৫ জানুয়ারি আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয় পুলিশ। তদন্ত প্রতিবেদনে রাষ্ট্রদ্রোহ অপরাধের প্রমাণ পাওয়া যায়। এ কারণে আসামিদের জামিন না মঞ্জুরের আবেদন করেছি আমরা। কিন্তু আদালত তাদের জামিন মঞ্জুর করেছেন।
আসামিপক্ষের আইনজীবী আব্দুল হক প্রামাণিক বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বাধীনতা স্মারকে ফুল দিতে গিয়ে জাতীয় পতাকা অবমাননার ঘটনা ঘটেছে। এটি অনাকাঙ্ক্ষিত। এ ঘটনায় করা মামলাটি জামিনযোগ্য। আমরা আদালতকে বোঝাতে পেরেছি, এটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। আদালত দুপক্ষের বক্তব্য শুনে আসামিদের জামিন মঞ্জুর করেছেন।
বিজ্ঞাপন
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী রফিক হাসনাইন বলেন, আমরা এই মামলার পুলিশ প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে নারাজি দিয়েছি। কারণ পুলিশ যে তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা দিয়েছে, তাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহকে বাদ দেওয়া হয়েছে। যেহেতু উপাচার্যের লিখিত আদেশে এই কর্মসূচি পালিত হয়েছে, তাই তাকে মামলা থেকে বাদ দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
আইনজীবী রফিক হাসনাইন বলেন, এটিকে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা হিসেবে গ্রহণ করতে হবে। পুলিশ তদন্ত করে রাষ্ট্রদ্রোহের প্রমাণ পেয়েছে। তবে মামলাটি রাষ্ট্রদ্রোহ হবে কিনা সে বিষয়ে আদালত আদেশ দেননি।
২০২০ সালের ১৬ ডিসেম্বর জাতীয় পতাকার নকশার বিকৃতি করে নিজেদের মতো করে তৈরি করা জাতীয় পতাকা নিয়ে ক্যাম্পাসের স্বাধীনতা স্মারকে ছবি তোলেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক-কর্মকর্তা।
একই সঙ্গে জাতীয় পতাকা পায়ের নিচে লাগিয়ে ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করা হয়। অল্প সময়ের মধ্যে ছবিগুলো ভাইরাল হয়ে যায়।
পরদিন ১৭ ডিসেম্বর মেট্রোপলিটন তাজহাট থানায় জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগ এনে লিখিত অভিযোগ দেন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি আরিফুল ইসলাম। একই অভিযোগ করেন আরেক ছাত্রলীগ নেতা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের দুজন শিক্ষক। সবমিলে এই ঘটনায় তিনটি মামলা করা হয়।
ফরহাদুজ্জামান ফারুক/এএম