বরিশাল-২ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) শাহে আলমের বিরুদ্ধে  জমি দখলচেষ্টার অভিযোগে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর দফতরে অভিযোগ দিয়েছেন কৃষক রতন ঘরামী। একই সঙ্গে তিনি স্থানীয় ইউপি সদস্য, এমপির ম্যানেজারসহ চারজনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছেন। 

বৃহস্পতিবার (২৭ জানুয়ারি) বরিশালের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটি দায়ের করেন রতন ঘরামী। 

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদীপক্ষের আইনজীবী মজিবর রহমান। তিনি জানান, আদালতের বিচারক মো. জহিরউদ্দিন মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্ত করে ৩০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) নির্দেশ দিয়েছেন।

মামলার বরাত দিয়ে আইনজীবী মজিবর রহমান জানান, বরিশাল-২ আসনের (বানারীপাড়া-উজিরপুর) এমপি  মো. শাহে আলম বানারীপাড়া উপজেলার উদয়কাঠি ইউনিয়নের তেতলা গ্রামের বাসিন্দা রতন ঘরামীকে জমি লিখে দিতে চাপ প্রয়োগ করে আসছিলেন। ১৫ দিন আগে এমপি শাহে আলম জমির মালিক রতন ঘরামীকে বাড়িতে ডেকে নিয়ে ১৫ কাঠা জমি তার নামে লিখে দিতে নির্দেশ দেনয়। রতন ঘরামী তার কথার কোনো জবাব না দিয়ে বাড়িতে ফিরে আসেন। ২৪ জানুয়ারি রাত সাড়ে ১১টায় এমপি শাহে আলমের ম্যানেজার আল আমীন, ৩ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ইব্রাহিম বেপারী, তুহিন গাজী ও ইলিয়াস খান তার ঘরে এসে ধারালো অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে তাকে জমি লিখে দেওয়ার জন্য হুমকি দেন। এ সময় তারা রতন ঘরামীকে দেশ ছাড়ার ভয়ভীতি দেখান। 

রতন ঘরামীর চিৎকারে প্রতিবেশীরা এগিয়ে এসে ৯৯৯ এ খবর দিলে পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার এবং তুহিন গাজী ও ইলিয়াস খানকে আটক করে। কিন্তু পরদিন আটকদের ছেড়ে দেয় পুলিশ। এ ঘটনায় রতন ঘরামী থানায় মামলা করতে গেলেও তা নেয়নি পুলিশ। পরে তিনি আদালতে মামলা করেন। 

মামলার বাদী রতন ঘরামী বলেন, ওই ঘটনার পর থেকে আমি এলাকাছাড়া। এমপি শাহে আলমের আতঙ্কে আমি বাড়িতে যেতে পারিনি। আদালতে মামলার পাশাপাশি এমপির বিষয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দফতরে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে অভিযোগ দিয়েছি। তাছাড়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহর কাছে অভিযোগ দিয়েছি।

তিনি বলেন, আমি আমার সম্পত্তিটুকু রক্ষা করতে চাই। আমি গরিব মানুষ, কৃষিকাজ করে সংসার চালাই। এমপি শাহে আলম আমার জমি নিয়ে গেলে উদ্বাস্তু হয়ে যাব। 

বরিশালের জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দিন হায়দার ঢাকা পোস্টকে বলেন, রতন ঘরামীর বিষয়টি গণমাধ্যম মারফত জানতে পেরে ওই দিনই বানারীপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে ঘটনাস্থলে পাঠিয়েছি। তিনি স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেছেন। কোনো কারণে যেন অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সেই ব্যবস্থা করা হচ্ছে। 

তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ সাধারণ মানুষের জন্য রাজনীতি। সুতরাং কেউই আইনের ঊর্ধ্বে না। আমরা রতন ঘরামীর নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছি।

সৈয়দ মেহেদী হাসান/আরএআর