রংপুরে শনাক্তের হার ৫৩ শতাংশ, আক্রান্ত ৪৫১
রংপুর বিভাগজুড়ে গত ২৪ ঘণ্টায় ৪৫১ জন করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে। এক দিনের ব্যবধানে শনাক্তের হার বেড়েছে ২৭ শতাংশ। বিভাগে ২৪ ঘণ্টায় ৮৪৬ জনের নমুনা পরীক্ষায় শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ৫৩ দশমিক ৩১ শতাংশে।
রোববার (৩০ জানুয়ারি) বিকেলে রংপুর বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে পাঠানো প্রতিবেদনে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডা. আবু মো. জাকিরুল ইসলাম।
বিজ্ঞাপন
এর আগের দিন শনিবার ৫৪৩ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ১৩৮ জন শনাক্ত হয়। শনাক্তের হার ছিল ২৫ দশমিক ৪১ শতাংশ। ওই দিন রংপুর জেলায় করোনা আক্রান্ত একজন মারা গেছেন। শুক্রবার ৯৪৩ জনের নমুনা পরীক্ষায় শনাক্ত হয় ৪৩৮ জন, শনাক্তের হার ছিল ৪৬ দশমিক ৪৫ শতাংশ।
স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় বিভাগের আট জেলার মধ্যে রংপুরের ১২৪, দিনাজপুরে ১০২, ঠাকুরগাঁওয়ে ৬৬, নীলফামারীর ৫১, পঞ্চগড়ের ৩৩, লালমনিরহাটের ৩১, গাইবান্ধার ২৮ ও কুড়িগ্রামের ১৬ জন করোনা পজিটিভ হয়েছেন।
বিজ্ঞাপন
বিভাগের ৮ জেলার মধ্যে করোনা শনাক্তের সর্বোচ্চ হার ছিল ঠাকুরগাঁওয়ে ৬৭ শতাংশ। এ ছাড়া রংপুরে ৬২, পঞ্চগড়ে ৫৪, দিনাজপুরে ৫০ দশমিক ৫০, নীলফামারীতে ৪৮, গাইবান্ধায় ৪৬, কুড়িগ্রামে ৪২ ও লালমনিরহাটে ৩৯ শতাংশ শনাক্ত ছিল।
গত ২৪ ঘণ্টায় বিভাগে করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন ২৮ জন। বর্তমানে বিভাগে করোনা আক্রান্ত গুরুত্বর ৬২ জনকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এর মধ্যে সংকটাপন্ন ১৪ রোগীকে আইসিইউ-তে রাখা হয়েছে। বাকিদের বাসায় রেখে চিকিৎসা চলছে। পুরো বিভাগজুড়ে এখন পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত হয়ে অসুস্থ রয়েছেন ৪ হাজার ১১৭ জন রোগী।
পরিচালক আরও জানান, রংপুর বিভাগে করোনায় সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত ও মৃত্যু হয়েছে দিনাজপুরে। এ জেলায় সর্বোচ্চ আক্রান্ত ১৫ হাজার ৮৬৩ এবং ৩৩৩ জন মারা গেছেন। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৯৫ জনের মৃত্যু হয়েছে বিভাগীয় জেলা রংপুরে। এ জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৩ হাজার ৩৮০-তে।
এ ছাড়া জেলা হিসেবে সবচেয়ে কম ৬৩ জন মারা গেছে গাইবান্ধায়। এ জেলায় করোনা শনাক্ত হয়েছে ৫ হাজার ১১১ জনের। ঠাকুরগাঁওয়ে মৃত্যু ২৫৬ ও শনাক্ত ৮ হাজার ৯৪, নীলফামারীতে মৃত্যু ৮৯ ও শনাক্ত ৪ হাজার ৭৯৯, পঞ্চগড়ে মৃত্যু ৮১ ও শনাক্ত ৪ হাজার ১৬, কুড়িগ্রামে মৃত্যু ৬৯ ও শনাক্ত ৪ হাজার ৭৪৮ এবং লালমনিরহাট জেলায় মৃত্যু ৬৯ ও আক্রান্ত ২ হাজার ৯২৯ জন।
তিনি জানান, ২০২০ সালের মার্চে করোনা মহামারি শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত বিভাগে মোট ৩ লাখ ১৭ হাজার ৯৬৭ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এর মধ্যে ৫৮ হাজার ৯০৭ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। আট জেলায় মৃত্যু হয়েছে ১ হাজার ২৫৫ জনের। এখন পর্যন্ত বিভাগে সুস্থ হয়েছেন ৫৪ হাজার ৭৯০ জন।
এদিকে, স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে রংপুর বিভাগের দিনাজপুর, পঞ্চগড় ও লালমনিরহাট জেলাকে অধিক ঝুঁকিপূর্ণ বা রেড জোন বলা হয়েছে। এ ছাড়া ইয়েলো জোন বা মধ্যম ঝুঁকিতে রয়েছে রংপুর, কুড়িগ্রাম ও ঠাকুরগাঁও জেলা। দিন দিন করোনার ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণে ভারতের কোলঘেঁষা এই বিভাগ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে বলে মনে করছেন স্বাস্থ্য অধিদফতর।
রংপুর বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. আবু মো. জাকিরুল ইসলাম বলেন, গণটিকাসহ বিভিন্ন বয়সী মানুষকে টিকার আওতায় আনার ফলে সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার আগের চেয়ে কমে আসছে। বর্তমানে নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন এবং করোনার ঊর্ধ্বমুখী পরিস্থিতিতে যেভাবে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষিত হচ্ছে, তা উদ্বেগজনক। তবে জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির পক্ষ থেকে জনগণকে সচেতন করতে মুখে মাস্ক পরার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। সেই সঙ্গে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিনা মূল্যে মাস্ক সরবরাহ করা অব্যাহত আছে।
ফরহাদুজ্জামান ফারুক/আরআই